অর্থ, জনবল ও সরঞ্জাম সংকটে খুলনা বিভাগের একমাত্র মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সিষ্টিউট। গেল কয়েক বছর ধরে ইন্সিষ্টিউটের প্রশিক্ষক, ইলেকট্রিশিয়ানসহ মোট ১৪টি পদ শুন্য।
২০০৫ সালে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জে উপজেলার তুলাতলা এলাকায় সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অধীনে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় এই মহিলা কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সিষ্টিউটি স্থাপন করে। সে সময়ে প্রকল্পভিত্তিক ৫টি ট্রেডে প্রশিক্ষন শুরু হয়।
তবে ২০০৭ সালের মাঝামাঝি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে বন্ধ হয়ে যায় এই প্রশিক্ষণ ইন্সিষ্টিউটের কার্যক্রম।
এর পর ২০১২ সালের এপ্রিল মাস থেকে তিনটি ট্রেড নিয়ে আবারো নুতন করে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এখানে বেসিক কম্পিউটার, আধুনিক গার্মেন্টস্ ও সমন্বিত মৌচাষ এই ৩টি ট্রেড চালু আছে।
চলতি ১০ম ব্যাজের প্রতিটি ট্রেডে ২৫ জন করে মোট ৭৫ জন মহিলা প্রশিক্ষণার্থী বর্তমানে এই কেন্দ্রে ( ইন্সিষ্টিউট) প্রশিক্ষন নিচ্ছেন। তিন মাস মেয়াদী এই ট্রেড গুলোর সকল প্রশিক্ষণার্থীর জন্য রয়েছে আবাসন ব্যবস্থা। তাছাড়া আবাসিক এই প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতি মাসে থাকা, খাওয়াসহ ৩শ’ টাকা করে ভাতা প্রদান করেছে সরকার।
ইন্সিষ্টিউটের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, কচুয়া ও গোপালগঞ্জের ৭৫জন প্রশিক্ষানার্থী রয়েছে এখানে। জনবল, অর্থ ও যন্ত্রপাতি সংকটের কারনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রশিক্ষাণার্থীদের কাঙ্খিত প্রশিক্ষণ প্রদান সম্ভব হচ্ছে না।
প্রশিক্ষাণার্থীরা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বেসিক কম্পিউটার বিভাগে ২৫ জন প্রশিক্ষণার্থী থাকলেও তাদের জন্য কম্পিউটার রয়েছে মাত্র ১০টি। যার মধ্যে ৩টি স্থায়ীভাবে অকেজো (নষ্ট)।
সমন্বিত মৌচাষ বিভাগেও রয়েছে যন্ত্রপাতি ও বক্স সংকট। তবে আধুনিক গার্মেন্টস বিভাগে ২৫টি অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক সেলাই মেশিন রয়েছে।
সরকারি হিসাবে এই তিন বিভাগে স্থায়ীভাবে ৬ জন প্রশিক্ষক থাকার কথা। তবে আছে মাত্র ১ জন। তাই অতিথি শিক্ষক দিয়ে খুড়িয়ে চলছে খুলনা বিভাগের একমাত্র এই মহিলা কৃষি প্রশিক্ষন ইন্সিষ্টিউটের প্রশিক্ষন কার্যক্রম।
আধুনিক গার্মেন্টস্ এর প্রশিক্ষক মনিরুন নাহার বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, টেকনিশিয়ান না থাকায় অনেক মেশিন চালু রাখা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে ইন্সিষ্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ৫জন প্রশিক্ষক, বাবুর্চি, ইলেকট্রিশিয়ান ও প্রতিটি বিভাগের জন্য একজন করে টেকনিশিয়ানসহ ৯টি ৪র্থ শ্রেণির পদ শূন্য।
অস্থায়ী ভিত্তিতে ৫/৬জন কর্মচারী নিয়োগ করা হলেও টানা ৯ মাস ধরে তাদের বেতন বন্ধ। যন্ত্রপাতিরও বেশ সংকট রয়েছে। এ সবের সমাধান হলে আরো কয়েকটি ট্রেড চালু করা সম্ভব বলেও জানান মোখলেসুর রহমান।
বিভাগীয় এই মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির সংকট গুলো সমাধান করা গেলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের এই জনপদের শিক্ষিত ও স্বল্প শিক্ষিত নারীদের কৃষিভিত্তিক বিভিন্ন প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্রতা বিমোচন সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।