টানা অবরোধ আর দফায় দফায় হরতালের মাঝেও ঘুরে দাড়াচ্ছে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়া বাগেরহাটের মৎস্য আড়ৎ (বিক্রয় কেন্দ্র) গুলো।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের প্রথম দিকে পরিবহণ সঙ্কটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ মৎস্য আড়ৎ বারাকপুর ও ফলতিতা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাছ পাঠাতে অসুবিধা হচ্ছিল। তবে গত এক সপ্তাহে আড়ৎ গুলোতে আবারও সাভাবিক হয়েছে পরিস্থিতি। বেড়েছে কেনাবেচা।
অবরোধের শুরুতে অর্ধেকে নেমে আসা রুই, কাতল, পাঙ্গাস, ট্যাঙরা, সরপুটিসহ সাদা মাছের দাম আবারো সাভাবিক হয়ে এসেছে। কোন কোনটিতে বেড়েছে।
এ অঞ্চলের সাদা মাছের অন্যতম বৃহৎ বিক্রয় কেন্দ্র বাগেরহাট সদর উপজেলার বারাকপুর মৎস্য আড়ৎ ঘুরে জানা গেছে এসব তথ্য।
এখানকার ব্যবসায়ী ও চাষীদের সাথে কথা বলে জান গেছে, ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই বাজারে আবারও সরবরাহ এবং দাম সাভাবিক হয়েছে। মৌসুমের শেষ হওয়াতে ক্ষেত্রবিশেষ বেড়েছে মাছের দাম।
পরিবহণ ব্যাবস্থা সাভাবিক হওয়াতে আড়ৎ থেকে মাছ ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মোকামে সরবরাহ করাতে পারছেন ব্যবসায়ীরা।
মৎস ব্যবসায়ী রিপন সরকার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছে মাছ সরবরাহ করি। অবরোধের শুরু থেকে পরিবহণ সঙ্কটে মাছ জেলার বাইরে পাঠাতে পাছিলাম না। ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে এখন অবস্থা বেশ ভালই। ভয় থাকরেও এখন গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে।
মামা ভাগ্নে মৎস্য আড়ৎ এর সত্ত্বাধিকারী আবুল কালাম জানান, অবরোধের কারনে চাষী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। তবে চলতি মৌসুমের শেষের দিক হওয়াতে বাধ্য হয়েই মাছ বিক্রি করছে চাষীরা।
তাই অবরোধের ধাক্কা কাটিয়ে আড়ৎ গুলোতে মাছের আমদানি আবারও সাভাবিক হয়েছে। আর এখন দামও মোটামুটি ভালোর দিকেই।
বারাকপুর আড়তের মাছ বিক্রি করতে আসা চাষী আল মামুন বলেন, ধর দেনা করে মাছ চাষ করেছিলাম। গত মাসে দুটি ঘেরের মাছ বিক্রি করে দাম পাই নি। তবে এই কয়েক দিনে মাছের দাম ভালো।
এসময় তিনি প্রশ্ন করে বলেন, আমাগো নিয়ে রাজনীতি কইরে কি লাভ। আমারা তো কাজ কইরে খাই। আমাগো ক্ষমতাও লাগবে না, হরতালও না।
সোনার বাংলা মৎস আড়ৎ এর সত্ত্বাধিকারী এবং বারাকপুর মৎস্য আড়ৎ সমিতির সভাপতি সৈয়দ জাহির হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, অবরোধের শুরুতে আমাদের আড়ৎ মাছের দাম অর্ধেকে নেমে আসলেও এখন দাম বেশির দিকেই। বর্তমানে পরিবহন ব্যবস্থা অনেকটাই সাভাভিক আছে, আর সিজিনও (মৌসুম) শেষের দিকে। তাই বাজারে সরবরাহ এবং দাম দুটই এখন একটু বেশি।
এখন বারাকপুর আড়তে আবারো আগের মতন প্রতিদিন অন্তত্য এক থেকে দেড় কোটি টাকার সাদা মাছের কেনাবেচা হচ্ছে। চাষ ও ব্যবসার সাথে জড়িতদের রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের এই ধরনের কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্যা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, আমারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়েছি এবং দিচ্ছি। আমাদের এলাকায় কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না। সব সেক্টরেই উন্নয়ন কাজ সাভাবিক আছে।