বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করে মাছ শিকারের অভিযোগে তিনটি ফিশিং ট্রলারসহ ৩৪ জন ভারতীয় জেলেকে আটক করেছে নৌবাহিনী।
আটকদের বৃহস্পতিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাগেরহাটের মংলা উপজেলার দিগরাজে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাটিতে আনা হয়েছে।
নৌবাহিনীর বরাত দিয়ে মংলা থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুর এলাহি বাগেরহাট ইনফে ডটকমকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটকদের কাছ থেকে প্রচুর সামুদ্রিক উদ্ধার করা হয়েছে।
সন্ধায় নৌবাহিনীর দিগরাজ ঘাটিতে আনার পর মংলা উপজেলা মৎস কর্মকর্তার উপস্থিতিতে নিলামের মাধ্যমে ওই মাছ বিক্রি করা হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে স্টার ফিস নামে একটি প্রতিষ্ঠান ২ লাখ ৬ হাজার টাকায় ওই মাছ কিনে নেয়।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মংলাস্থ নৌ-ঘাঁটির এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বাগেরহাট ইনফে ডটকমকে বলেন, বুধবার বিকেলে নৌবাহিনীর জাহান বানৌযা শহিদ মহিদুল্লাহ মংলা বন্দর থেকে প্রায় ৯০ নটিক্যাল মাইল দূরে বঙ্গোপসাগরের ফেরারওয়ে বয়া এলাকার অদূরে টহল দিচ্ছিল। এসময় তারা ‘এফবি মালিকের দান’, ‘এফবি প্রসনজিত, এবং ‘এফবি সনাতন’ নামে ৩টি ভারতীয় ট্রলাককে মাছ ধরতে দেখে।
পরে অবৈধভাবে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকারের অভিযোগে নৌবাহিনীর সদস্যরা ওই ৩টি ট্রলারসহ ৩৪ জেলেকে আটককরে।
আটকরা হলেন- রিপন দাস (৩৮), তপন দাস (২২), দুধ কুমার বেড়া (৪৩), মুক্তা ঘরামী (৫০), দেবাংশু সরকার (৩৮), জয় রতন দাস (৬০), খোকন দাস (২৩), স্বপন দাস (৩৮), হারাধন দাস (৪৮), জগদীশ দাস (৩৮), বাবলু দাস (৪৪), কৃষ্ণ দাস (৩০), নান্টু দাস (৪৫), জহুর লাল দাস (২৫), হৃদয় দাস (১৮), প্রদীপ মন্ডল (৩০), ধীরেন দাস (৫৫), বিশ্বনাথ মন্ডল (৩৮), সুমীর মন্ডল (৩০), বেচম দাস (১৯), কালিপদ দাস (২২), শ্যামল দাস (৩৭), টিংকু দাস (৩৫), বিশ্বনাথ দাস (৩০), প্রকাশ দাস (২৬), সুরজিত দাস (১৮), হরিচরণ দাস (১৯), রাকেশ দাস (২৯), নৃতলাল দাস (২২), সুমীর দাস (১৮), খুদিরাম দাস (২৫), প্রসেনজিৎ মাঝি (২৪), তপন দাস (২২) ও প্রসেনজিৎ সরদার (২৩)।
এদের বাড়ি ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বিভিন্ন গ্রামে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে তাদের বাগেরহাটের মংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে থানার এসআই মঞ্জুর এলাহি জানান।
তিনি বলেন, এই ঘটনায় নৌবাহিনী বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ১৮৯৩ সালের সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশে মংলা থানায় একটি মামলা করেছেন।
এর আগে গত বছরের শেষদিকে কয়েক দফায় ১৮৯ জন ভারতীয় জেলেকে একই অপরাধে আটক করেছিল নৌবাহিনী, যাদের মধ্যে অধিকাংশই পরে ছাড়া পায়।
বারেগহাট কারাগারের জেলার বদরুদ্দৌজা চৌধুরী বাগেরহাট ইনফে ডটকমকে জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে আটক ১৮৯ জনকে বাগেরহাট কারাগারে প্রেরণ করেছিলেন আদালত। পরে বেশিরভাগ জেলে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে দেশে ফিরে গেছে।
বর্তমানে এ কারাগারে ২০ আটক ভারতীয় জেল আটক আছেন বলেও জানান তিনি।