সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাঙ্কার ডুবির পর পেরুতে চলেছে প্রায় এক মাস। তবে এখনো শুরু হয়নি ফার্নেস অয়েল মিশ্রিত বর্জ ব্যবস্থাপনা।
এই সময়ের মধ্যে নদী খালে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণে চলেছে নানা পরিকল্পনা আর কার্যক্রম।
দুর্ঘটনার পর তেল অপসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কিছুটা বিলম্ব হলেও প্রথমে স্থানীয়দের মাধ্যমে দেশিয় পদ্ধতিতে সুন্দরবনের নদী-খালে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণে সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এতে ব্যাপক সাড়াও পড়ে।
এই প্রক্রিয়ায় স্থানীয় মাধ্যমে রাষ্টায়ত্ব প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া তেলের ৬৮ হাজার ২০০ লিটার সংগ্রহ করে বলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানিয়েছেন ঠিকাদার মো. রফিকুল ইসলাম বাবুল।
এরই মধ্যে ১৩ ডিসেম্বর থেকে সুন্দরবনকে তেল দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কাজ শুরু করে বন বিভাগ। শ্রমিক নিয়োগ করে বনের নদী-খালে ছড়িয়ে পড়া তেল লেগে থাকা কচুরিপনা, লতাপাত ও জলজ উদ্ভিদ সংগ্রহ শুরু করে তারা।
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীর দুর্ঘটনাস্থল সংলগ্ন বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনি এলাকার বাসিন্দা রনি গাজি মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বনের নদী-খাল থেকে তেলযুক্ত কচুরিপানা ও অনান্য বিভিন্ন লতাপাতা সংগ্রহ করে বেশ কয়েকটি বাঁশের খাঁচায় রেখে শুকানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আমীর হোসেন চৌধুরী মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ‘সংগ্রহী কচুরিপানাসহ তেলযুক্ত লতাপাতা মিলে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ টন বর্জ বড় ৫টি বাঁশের খাঁচায় রাখা হয়েছে। বর্তমানে এগুলো শুকানো হচ্ছে। এর পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
পরবর্তী ব্যবস্থা কি হতে পারে সে ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে আমীর হোসেন চৌধুরী বলেন, ’এই বর্জগুলো আরো একটু শুকানোর পর দূরে কোথাও মংলার কাছাকাছি কোনো জায়গায়, যেখানে লোকালয় নেই সেখানে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা বা মাটি চাপা দেওয়া হবে।’
সেক্ষেতে এগুলো শুকিয়ে গেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে যেটি পরিবেশ সম্মত হবে সেভাবে এসব বর্জ ব্যপস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া বলে বলে জানান তিনি।
এদিকে, তেল মিশ্রিত এসব বর্জ ব্যবস্থাপানায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে আরও একটি পরিবেশ বিপর্যের শঙ্কা তৈরি হবে বলে ধারণা করছেন বিশেজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ লিটার ফার্নেস তেল নিয়ে অন্য একটি ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় ডুবে যায় ওটি সাউদার্ন স্টার-৭। এতে ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খাল হয়ে বিস্তীর্ণ এলাকায়।