সুন্দরবনে ট্যাঙ্কার ডুবির ঘটনায় ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষয়ক্ষতি ও জীববৈচিত্রের ওপর এর প্রভাব পর্যবেক্ষণে কাজ শুরু করেছে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দল।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থল শ্যালা নদী ও এর আশপাশের এলাকা থেকে পানি, গাছ ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলটি সকাল থেকে ৪টি দলে ভাগ হয়ে স্পিড বোটে করে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ের জন্য নমুনা ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
ট্যাংকার ডুবির ঘটনায় সুন্দরবনে ক্ষয়ক্ষতি, দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব ও করণীয় নির্ধারণে কাজ করছে ২৫ সদস্যের ‘জয়েন ইউএন গভর্নমেন্ট ওয়েল স্পিল রেসপন্স মিশন’ নামে জাতিসংষের এ বিশেষজ্ঞ দল।
সোমবার বিকেল দলটির সদস্যরা ঢাকা থেকে সুন্দরবন (মংলা) আসেন।
তেল নিঃসরণ বিশেষজ্ঞ, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচিসহ সংস্থার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত দলে প্রধান এমেলিয়া ওয়ালস্ট্রম। ঢাকা ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও রয়েছেন এ দলে।
প্রতিনিধি দলের সদস্য জাতিসংঘের ঢাকা অফিসের পলিসি, ইনোভেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স (Policy, Innovation and Communications) বিভাগের মিডিয়া কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, সকাল থেকে ৪টি দলে ভাগ হয়ে চাঁদপাই রেঞ্জের বিভিন্ন এলকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় তারা ক্ষয়ক্ষতি নির্নয়ে ও গবেষণার জন্য বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।
২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত দলটি সুন্দরবনে থেকে কাজ করবেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান এমেলিয়া ওয়ালস্ট্রম সুন্দরবনে তাদের পরিদর্শনের ব্যাপারে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই বোঝা যাবে প্রকৃতপক্ষে এই দুর্ঘটনা সুন্দরবনের কতটুকু ক্ষতি করেছে এবং তা কাটিয়ে উঠতে কি করতে হবে।
পাঁচদিন ধরে দলটি সুন্দরবনে সরেজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত ও উপকরণ সংগ্রহ করবেন। প্রাথমিকভাবে তারা পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং তেল নিয়ন্ত্রণের উপায় নিয়ে একটি গবেষণা করে সরকারকে এ ব্যাপারে সুপারিশ দেবেন বলে জানা গেছে।
গত ৯ ডিসম্বের ভোরে সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ নামে তেলবাহী একটি ট্যাংকার ৩ লাখ ৫৭ হজার ৬৬৪ লিটার ফার্নেস অয়েল নিয়ে অন্য একটি ট্যাংকারের ধাক্কায় ডুবে যায়। তেল ছড়িয়ে পড়ে সুন্দরবনের বিস্তৃর্ণ এলাকায়।
এরপর ১৫ ডিসেম্বর সরকার এ ব্যাপারে সহায়তার জন্য জাতিসংঘের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ এ বিশেষজ্ঞ দলটি সুন্দরবনে পাঠায়।