সাড়ে তিন লাখ লিটারেরও বেশি তেল নিয়ে সুন্দবনে ডলফিন অভয়াশ্রমের কাছে ট্যাঙ্কার ডুবির পর শ্যালা নদীতে নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেণ মংলা বন্দর কর্তিপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় মংলা বন্দর কর্তিপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর হাবিবুর রহমান ভূয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার একটি ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় তেলবাহী ট্যাংকার ‘ওটি সাউদার্ন স্টার-৭’ ডুবে যায়। এ তেল ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের ব্যাপক প্রাকৃতিক পরিবেশে বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১১টায় মংলা বন্দর কর্তিপক্ষ নৌপরিবনহ, বনবিভাগ, বিপিসিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বন্দরের সভা কক্ষে জরু সভায় বসেন।
সভা থেকে সুন্দরবনের ভেতরের শ্যালা নদীর ভেত দিয়ে আজ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নৌযান চলাচলে নিষেদ্ধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান হয়। তবে, সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে মংলা বন্দররে জন্য নৌযান চলাচলকারী পশুর চ্যানেল বন্ধ করা হয়নি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপথ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান ড. মো. শামছুদ্দোহা খন্দকারে সভাপতিত্বে সভায় মংলা বন্দর কর্তিপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর হাবিবুর রহমান ভূয়ার, সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আমীর হোসেন চৌধরীসহ উদ্ধতনরা উপস্থিত ছিলেন।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. মো. শামছুদ্দোহা খন্দকার জানান, পুনরায় আদেশ না দেয়া পর্যন্ত শেলা নদী দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নদীতে ভাসমান তেল অপসারণে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা জাহাজ কান্ডারি-১০ মংলায় পৌছেছে। তবে আপাতত তেল অপসারণে কাজ শুরু করছে না কান্ডারি।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই মূহুর্তে স্থানীরা নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল তুলে নিবে। স্থানীয়দের তোলা এ তেল খুলনার পদ্মা ওয়েল ডিপো কিনে নিতে বাদ্ধ থকবে।
স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তেল উত্তোলনের পর অবশিষ্ট তেলে অপসারণে কাজ করবে কান্ডারি-১০।
মঙ্গলবার গোপালগঞ্জের একটি পাওয়ার প্লান্টের জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে যাওয়ার সময় সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে যাত্রাবিরতি কালে ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ একটি ট্যাঙ্কার এমটি টোটাল খাক্কা দেয়। এতে ট্যাঙ্কারটি ডুবে যায়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে ৩ দিনে সাডে তিন লক্ষ লিটারেরও বেশি তেলবাহী ট্যাঙ্কারটি থেকে তেল ছড়িছে সুন্দরবনসহ আসপাশের প্রায় ৭০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকায়। ফলে মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র।
এদিকে ঘটনার দু’দিন পর শ্যালা নদীতে ডুবে যাওয়া অয়েল ট্যাংকার সাউদার্ন ষ্টার -৭ (সেভেন)কে ঘটনা স্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে নদীর কূলে এবং পরে চরে নেওয়া হয়েছে।
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া মংলার মেসার্স খানজাহান আলী স্যালভেজ’র ডুবরি দল ডুবন্ত ট্যাংকারের সাথে লোহার তার পেচিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তোলনের কাজ শুরু করে।
প্রতিষ্টানটিত মালিক আবুল কালাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, তাদের বার্জ (উদ্ধারকারী নৌযান) বিডি রাইজিং ট্যাঙ্কারটিকে উদ্ধার করে ঘটনা স্থাল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে সরিয়ে নিয়ে এসেছে। বর্তমানে এটি মংলার জয়মনিরঘোল এলাকায় রাখা হয়েছে।
দূর্ঘটনার পর থেকে ট্যাংকারটি উত্তোলনে বিআইডব্লিউটিএ’র দু’টি উদ্ধারকারী জাহাজ আসার কথা থাকলে দীর্ঘ সময়ে সেগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। ডুবরিরা অনেক চেষ্টা ও তল্লাশীতেও কোন খোঁজ মেলেনি ট্যাংকারের নিখোঁজ মাস্টার মোকলেসুর রহমানেও।