সুন্দরবনের শেলা নদীতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ৫৭ হাজার লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে ট্যাঙ্কার ডুবির ঘটনায় ব্যাপক জীববৈচিত্র নষ্টের আশংঙ্কা করছে বনবিভাগ।
এরইমধ্যে ট্যাঙ্কারটি ফেটে সুন্দরবনের নদীর পানিতে তেল ছড়িয়ে পড়েছে বলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন মংলাস্থ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের কনটিনজেন্ট কমান্ডার মেহেদী মাসুদ।
তিনি বলেছেন, দুর্ঘটনার পর ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়েছে। জাহাজের নাবিকদের মধ্যে সাতজন সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও মাস্টার মোখলেস নিখোঁজ রয়েছেন। কোস্ট গার্ড সদস্যরা সেখানে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ভোরে গোপালগঞ্জের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জ্বালানি তেলবাহী ওই ট্যাঙ্কারটি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগমারী এবং তাম্বুলবুনিয়ার মাঝামাঝি শ্যালা নদীতে টোটাল নামে অপর এক ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় ডুবে যায়। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন তেলবাহী ট্যাঙ্কারটির মাস্টার মোকলেসুর রহমান মোকলেস (৫০)। তবে ট্যাঙ্কারটির ৮ নাবিকের মধ্যে বাকিরা সাঁতরে কূলে উঠতে সক্ষম হয়েছেন।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম মাস্টার জানান, ডুবে যাওয়া ট্যাঙ্কারটিতে ৩ লখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ লিটার তেল ছিল। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় শোয়া দুই কোটি টাকা।
সাউদার্ন স্টারের মালিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স হারুণ অ্যান্ড কোং এর ব্যবস্থাপক মো. গিয়াস উদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ওই জাহাজে মাস্টার মোখলেসুর রহমানসহ ৮ জন ক্রু ছিলেন।
কমান্ডার মেহেদী মাসুদ বলেন, রাতে জাহাজটি চাঁদপাই রেঞ্জের জয়মনি ঘোলের কাছে শ্যালা নদীতে নোঙর করে ছিল। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঘনকুয়াশার মধ্যে আবার যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে টোটাল নামে একটি খালি কার্গো জাহাজ পেছন থেকে সাউদার্ন স্টারকে ধাক্কা দেয়। এতে সাউদার্ন স্টারের একপাশের খোল ফেটে যায়।
এ ব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আমীর হোসেন চৌধুরী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ট্যাঙ্কারটি ফেটে না গেলে এ তেল ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম। পরিস্থিতি জানতে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে বনবিভাগের একটি টিম রওনা দিয়েছে। তার ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে কি পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়েছে তা জানা যাবে।
এই বিপুল পরিমান তেল ছড়িয়ে পড়লে সুন্দরবনের জলজ জীববৈচিত্র মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ট্রাঙ্কারটি দ্রুত উদ্ধারে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, মালিক পক্ষ ও বিআইডাব্লিউটিএকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান আমীর হোসেন চৌধুরী।