বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলীকে উত্তেজিত এক হাজতি শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার সকালে জেলা কারাগারে নিয়মিত পরিদর্শনকালে এই ঘটনা ঘটে। তবে, এ ঘটনায় এখনও ঐ হাজতি বা কারা কর্তৃপক্ষের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে কোনরূপ ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
অভিযুক্ত ঐ হাজতির নাম নূরুজ্জামান শেখ (৩৩)। তিনি বাগেরহাট সদর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের কার্ত্তিকদিয়া গ্রামের আফসার উদ্দিন শেখের ছেলে।
অনুসন্ধানে জান গেছে, ২০১২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর নিজ স্ত্রীকে জখম করার মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। তখন থেকে তিনি বাগেরহাট কারাগারে রয়েছেন।
বুধবার দুপুরে বাগেরহাট আদালতে মামলায় হাজিরা দিতে আসা জেলা কারাগারের কয়েকজন বন্দি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কারাগার পরিদর্শনে এসেছিলেন।’
জেলের (কারাগার) ভেতর মাদক কেনা-বেঁচা নিয়ে হাজতি নূরুজ্জামানের সাথে কারাগারের অন্যতম প্রধান কারারক্ষী মহিউদ্দিনের পূর্ব লেনদেন আছে। ডিসি স্যার কারাগার পরিদর্শনের সময় নূরুজ্জামান নিজ সেলের সামনে মহিউদ্দিনের সাথে ওই লেনদেন নিয়ে উচ্চস্বরে বচসা করছিলেন। ডিসি স্যার সেখানে পৌঁছে নূরুজ্জামানের কাছে বচসার কারণ জানতে চান।
তিনি আরও জানান, এসময় উত্তেজিত নূরুজ্জামান জেলা প্রশাসককে চিনতে না পেরে তার বুকে ধাক্কা দিয়ে মুখে ঘুষি মারে। সেখানে উপস্থিত অন্যরা দ্রুত নূরুজ্জামানের কবল থেকে জেলা প্রশাসককে উদ্ধার করে সরিয়ে নিয়ে যান।
তবে বাগেরহাট কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষকান্তি দে হাজতিদের এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘নূরুজ্জামান উগ্র মেজাজের মানুষ। দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে এবং জামিন লাভে ব্যার্থ হয়ে সে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলো
মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের নিয়মিত কারাগার পরিদর্শনকালে সে জেলা প্রশাসকের সামনে এসে উচ্চস্বরে তার এসব অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করে। এ সময় কারারক্ষীরা তাকে নিবৃত করে সরিয়ে নেয়। এটা অতি সাধারণ একটি বিষয়।’
তিনি আরও করেন, ‘কারা কর্মকর্তারা বলেছেন যে নূরূজ্জামান মানসিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ। তবে আমার কাছে সে রকম মনে হয়নি। এর আগে সে বাগেরহাট আদালতে এক পুলিশ কনস্টেবলের উপর হামলা করেছিলো।’
ঐ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে। ‘আমরা তাকে অন্য হাজতিদের কাছ থেকে পৃথক করে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে জানতে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, ‘নূরুজ্জামান মানসিক রোগী না, ভয়ঙ্কর প্রকৃতির অপরাধপ্রবণ মানুষ। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
তবে মঙ্গলবার ঠিক কী ঘটেছিলো সে বিষয়ে জেলা প্রশাসক কোন কথা বলেন নি।