বাংলাদেশ বেতারের বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ও শহরের খানজাহান আলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মীর জুলফিকার আলী লুলু আর নেই।
হ্নদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মঙ্গলবার ভোরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়েসহ অসংখ্যা গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতাল ও তার শহরের বাসায় সহকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।
বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মীর জুলফিকার আলী লুলু মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাগেরহাট-২ আসনের সংসদস সদস্য অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশার ভাই।
তিনি জানান, মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৬ টার দিকে বাগেরহাট শহরের পুরাতন জেলখানা সড়কের বাড়িতে অবস্থান কালে তাঁর বুকে ব্যাথা অনুভূত হলে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬টা ১০ মিনিটে তাঁর মুত্যু হয়।
মীর জুলফিকার আলী ১৯৫৯ সালে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের সম্ভ্রান্ত মীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মরহুম মীর আশরাফ আলীর চতুর্থ ছেলে।
বাগেরহাট শহরের আমলাপাড়া বহুমূখি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, সরকারী পিসি কলেজ থেকে এইচএসসি, খুলনার আযম খান কমার্স কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে অনার্স এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স করে বাগেরহাটের খানজাহান আলী কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন।
ছাত্র জীবনে তিনি সম্পৃক্ত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে। ঐহিত্যবাহী এই ছাত্র সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতিও ছিলেন তিনি।
পরে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। ওই সময়ে তিনি বাগেরহাটের সব ধরনের প্রগতিশীল কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। কলেজে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিলেন বাংলাদেশ বেতারে।
বর্ণাঢ্য জীবনে মীর জুলফিকার আলী লুলু খানজাহান আলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ, বাগেরহাট ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক, জেলা ক্রিড়া সংস্থা ও জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ছড়িত ছিলেন বাগেরহাটের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে।
মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় তাকে শেষ বারের মতো নেওয়া হয় মরহুমের কর্মস্থল খানজাহান আলী ডিগ্রী কলেজে। দুপুর ১টায় নেওয় হয় বাগেরহাট প্রেসক্লাবে। এসময়ে প্রেসক্লাবের সদস্যরা তাঁকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
দুপুর ২টায় বাগেরহাট বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুল প্রাঙ্গনে তাঁর প্রথম এবং বিকাল ৪টায় তার গ্রামের বাড়ি কচুয়া উপজেলার টেংরাখালীতে দ্বিতীয় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তার এই অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারে প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলায় কর্মরত সকল সাংবাদিক, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, বাগেরহাট ফাউন্ডেশন, জেলা রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ।