বাগেরহাটের শরণখোলায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হল প্রলয়ঙ্করী ঘুর্নিঝড় “সিডর” এর সপ্তম বার্ষিকী।
দিনটি সরণে শনিবার দিন ভর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আয়োজন করা হয় মিলাদ মাহফিল, কাঙ্গালি ভোজ, শোক র্যালি, আলোচনা ও স্মরণসভা সহ নানা আয়োজন।
সকালে সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদে আয়োজন করা হয় “সিডর” দিবস স্মরণে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন।
উত্তর সাউথখালীতে মিলাদ মাহফিল, কাঙ্গালি ভোজ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৫নং ওয়ার্ড আয়ামীলীগের সভাপতি ছত্তার ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অলোচনায় বক্তব্য রাখেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, মোঃ হালিম খান, প্রভাষক আকন আলমগীর, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আঃ মালেক রেজা, মুক্তিযোদ্ধা আঃ রব মল্লিক।
দক্ষিন সাউথখালীর গাবতলায় একই ধরনের কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মোঃ মকবুল হোসেন। বক্তব্য রাখেন, ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, সোলায়মান হোসেন, লিটন হাওলাদার প্রমুখ।
অপরদিকে শনিবার বিকালে উপজেলার রাজৈর গ্রামের ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে মৎস্যজীবি-জেলে সমিতি ও আশ্রয় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মৎস্যজীবি-জেলে সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ফরাজীর সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন, মৎস্যজীবি নেতা দুলাল ফরাজী, মোঃ সোলায়মান ফরাজী, আঃ রহিম, মোঃ লাল মিয়া, সুলতানা মুন্নি প্রমুখ।
এছাড়া, নিহতের স্বজনরা ঘরে ঘরে কোরআনখানী ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সরকারী হিসাবে সিডরে বাগেরহাট জেলায় মারা গিয়েছিল ৯০৮ জন নারী, পুরুষ ও শিশু। তবে বেসরকারী হিসাবে প্রাণহানীর সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজারের বেশী। সিডরে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুন্দরবন।
সরকারী ওই হিসেবে সিডরের আঘাতে বাগেরহাট জেলায় ৬৩ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছিল। আহত হয়েছিল ১১ হাজারের বেশী মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দুই লাখ ৮৩ হাজার ৪৮২টি পরিবার, ৩৬৭ কি:মি পাকা রাস্তা, ৮৬২ কি: মি: কাঁচা সড়ক, প্রায় ৬৫ কি:মি: বাঁধ এবং ৭৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মংলা উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শরণখোলা উপজেলা এবং এই উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়ন। সিডরের পর সরকারীভাবে জেলায় মোট ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছিল ৪৫৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।