বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ চাঞ্চল্যকর দুই সহোদর হত্যা মামলার আসামীদের জীবন নাশের হুমকির পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বাদির পরিবার।
চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের পায়লাতলা গ্রামে খুন হয় সহোদর দুই শিশু মিরাজুল হাওলাদার (১১) ও রিয়াজুল হাওলাদর (৮)।
ঘটনার পর থানা পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসাসীকে আটক করেলেও দিঘ্য দিনেও ধরা পড়েনি অন্যান্য আসামীরা।
নিহত শিশু দু’টির পিতা লোকমান হোসেন বাবুর বাদির দাবি, আসামীদের প্রকাশ্যে হুমকির ভয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে তার। এঘটনায় পরিবার পরিজনের নিরাপত্তা ও অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য মোরেলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রী এবং বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জান গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে বারইখালী ইউনিয়নের পায়লাতলা গ্রামে খুন হয় আপন দুই ভাই। বাবু হাওলাদরের ওই দুই ছেলে স্থানীয় দক্ষিন বহরবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় এবং প্রথম শ্রেণীতে পড়ত।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার দিবা গত রাতে নিহতদের দাদি রওশন আরা বেগম তার দুই নাতী মিরাজুল ও রিয়াজুল রাতের খাবার শেষে এক সাথে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ৪ টার দিকে প্রতিবেশী মৃত বারেক মৃধার লম্পট ছেলে বাচ্চু মৃধা (৪০) ওই বাড়িতে আসে। প্রথমে সে ভাত খেতে চায়। কিছুক্ষন পরে বৃদ্ধা রওশন আরা বেগমকে জুসের সাথে ঘুমের ওষূধ খাইয়ে নাতী মিরাজুল ও রিয়াজুলকে হত্যা করে বিবস্ত্র অবস্থায় একজনকে ঘরের পিছনের পুকুরে অপরজনকে ঘরের সামনে ডোবায় ফেলে রাখে।
সকালে ঘুম থেকে জেগে মিরাজুল ও রিয়াজুলের লাশ ভাসতে দেখে তার দাদী ও স্থানীয় লোকজন। জমিজমা সংক্রন্ত শত্রুতার কারনে এ জোড়া হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে বলে দাবী করেছেন নিহতদের পিতা বাবু হাওলাদার।
এ ঘটনায় ১২ সেপ্টেম্বর নিহত ২ সহোদরের পিতা লোকমান হোসেন বাবু বাদি হয়ে বাচ্চু মৃধাসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে আসামী করে মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার প্রধান আসামী বাচ্চু মৃধা গ্রেপ্তার ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তবে অন্যান্য আসামী প্রকাশ্যে পুলিশের নাকের ডগায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মামলার আসামী ও তাদের আত্মীয় স্বজন বাদির পরিবারকে জীবননাশসহ মামলা তুলে নেয়ার লাগাতার হুমকি অব্যাহত রেখেছে। তাদের হুমকির ভয়ে বাদি মামলা পরিচালনায়ও বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারক বিশ্বাস সোমবার (০৩ নভেম্বর) বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, এ মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা চলছে। তবে মামলার বাদিকে হুমকির বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।