একটি হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় কয়েকটি পরিবার এলাকা ছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু বাড়িঘর-ব্যবসা ভাংচুর ও লুটপাট নয়, আসামী পক্ষের বাড়ীর গাছপালা, মৎস ঘেরের মাছ এমন কি গোয়ালের গরু-মহিষ লুটে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকা ছাড়া মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা গ্রামের একটি পরিবারের বড় ছেলে (৩৫) জানান, হামলা, লুটপাট আর জীবনের ভয়ে বাড়ীঘর ছাড়া পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন নিকট আত্মীয় স্বজনদের বাড়ী। এসব পরিবারের স্কুল পড়ুয়া ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তারা এখন চরম অনিশ্চয়াতার মধ্যে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগিরা পুলিশের কাছে গেলে তারা (পুলিশ) তাদের কোন আইনি সাহায্যে কিম্বা মামলা গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ তার।
এদিকে, এ ঘটনায় বাধ্য হয়ে বাগেরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে গিয়ে দ্রুত বিচার আইনে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করেছেন ভাংচুর, লুটপাট শিকার পরিবার গুলো।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এলাকার আইন-শৃংখলার পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। সাম্প্রতি বিভিন্ন হামলা আর লুটপাটের ঘটনায় এখন চাম উত্তেজনা বিরাজ করছে এলাকায়।
সরেজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে দেখা গেছে, এলাকার সাধারন জনগন এবিষয়ে কোন রকম মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। সবাই এক প্রকার ভয়ে দিন কাটাচ্ছে। এ ঘটনার বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ধর্না দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের জিউধরা গ্রামে দুসকৃতীদের হাতে খুন হন ওয়ার্ড আওলামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোজাম্মেল শিকদার। এ ঘটনার পরদিন ক্ষমতাসিন দলের লেবাস লাগিয়ে লুটপাট, ভাংচুর চালায় একই গ্রামের আব্দুল হামিদ তালুকদার, হেমায়েত বিশ্বাসসহ ৪-৫টি বাড়িতে।
শুধু বাড়িঘর-ব্যবসা ভাংচুর, লুটপাট করে ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা, বাড়ীর গাছপালা, মৎস ঘেরের মাছ এমন কি গোয়ালের গরু- মহিষ নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। জীবন বাচাঁতে কোন রকম ছেলে মেয়েদের নিয়ে বাড়ী থেকে পালিয়ে রক্ষা পায় তারা। আশ্রয় নেয় বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ী।
এ ঘটনার প্রায় দুই মাস পার হয়ে গেলেও ঘরে ফিরতে পারছেনা গ্রাম ছাড়া কয়েকটি পরিবার। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে ওই পরিবার গুলো। এসব পরিবারের স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কায় এখন পরিবার গুলো।
এ ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সাধারন জনগন কোন রকম মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। ভয়ে দন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী।
এদিকে, লুটপাট,ভাংচুরের কথা স্বীকার করে দুসকৃতীদের হাতে খুন হওয়া ওয়ার্ড আওলামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোজাম্মেল শিকদার ছেলে এবং মামলার বাদী মোঃ জাহিদ শিকদার বলেন, স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী এবং এলাকার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এব্যাপারে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) নিজামুল হক মোল্যা বলেন, এ ঘটনা শোনার পর, আমি মোরেলগঞ্জ ওসি’কে আইন-সৃংখলা রক্ষাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছি।
এলাকার আইন-শৃংখলার ফিরিয়ে আনাসহ এ বিষয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগিরা ও এলাকার শান্তিপ্রিয় জনসাধারন।