বৃহস্পতিবার সকালে বাগেরহাট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিলো জেলা পর্যায়ের গ্রামীণ খেলাধূলা প্রতিযোগিতা।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে মাঠে এসে দেখা গেল প্রতিযোগিতার কোন প্রস্তুতিই নেই। তৈরী হয়নি মাঠ, কেনা হয়নি পুরস্কার। এমনকি উপজেলাগুলো থেকে আসেননি খেলোয়াড়রা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিযোগিতার কথা জানানো হয়নি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের। ফলে খবর পাননি খেলোয়াড়রা। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি কোন সভা ছাড়াই ২৭ অক্টোবর প্রতিযোগিতার তারিখ পুণঃনির্ধারণ করলেন আয়োজকরা।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আয়োজিত এই গ্রামীণ খেলাধূলা প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
প্রতিযোগিতায় পুরুষদের জন্য থাকছে মোরগ লড়াই, সাতচাড়া, গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্ধা, হা-ডু-ডু ও তৈলাক্ত বাঁশে ওঠা। মেয়েদের প্রতিযোগিতার বিষয়গুলো হচ্ছে এক্কা দোক্কা, কানামাছি ভোঁ ভোঁ, বউচি, দড়িলাফ এবং বিস্কুট দৌড়।
গত ২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতা বিষয়ক প্রস্তুতি সভার কার্য্যবিবরণী থেকে জানা যায়, ঐ সভা ১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে নয়টায় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করে।
উদ্বোধন ও সমাপনী উভয় অনুষ্ঠানে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলীকে প্রধান অতিথি নির্বাচন করা হয়। উপজেলা থেকে প্রতিযোগী পাঠাতে জেলার নয়টি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে অবহিত করানোর সিদ্ধান্ত হয় সভায়। প্রতিযোগিতা সুন্দরভাবে শেষ করতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষকদের নিয়ে চারটি উপ-কমিটি গঠণ করা হয়। কিন্তু ঐ সভার কোন সিদ্ধান্তই আর বাস্তবায়ন করা হয়নি।
এবিষয়ে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মোরেলগঞ্জের ইউএনও মো: আব্দুল হালিম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘বাগেরহাট থেকে আমার কাছে গ্রামীণ খেলাধূলা প্রসঙ্গে কোন চিঠি বা বার্তা আসেনি। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে আমার কাছে ফোন করে খেলোয়াড় রওনা হয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হয়েছে।’
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম এহতেশামুল হক বলেন, ‘আমি কেন, কোন ইউএনও এ বিষয়ে কোন চিঠি পাননি। প্রতিযোগিতার তারিখ পুণঃ নির্ধারিত হয়েছে কি না এখনও জানিনা।’
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাগেরহাটের এক প্রবীন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘এটা বিস্ময়কর যে প্রতিযোগিতার তারিখ চূড়ান্ত হলো, কিন্তু পরবর্তি দায়িত্বগুলো পালন করলেন না দায়িত্বপ্রাপ্তরা। আসলে তারা এই প্রতিযোগিতাকে নিতান্তই অবহেলা করেছেন।’
তবে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: আরিফ নাজমুল হাসান বাগেরহাট নিউজের কাছে দাবি করেন যে, জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রতিযোগিতার বিষয়ে যথাসময়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু গ্রামপর্যায়ে খেলোয়াড়রা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় প্রতিযোগিতার তারিখ ২৭ অক্টোবর পুণঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সরদার সেলিম আহমেদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করছে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন। এ জন্য দেয়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ৫৫ হাজার টাকার আর্থিক অনুদানও তারাই খরচ করছেন। কোন খেলোয়াড় না আসায় প্রতিযোগিতা হয়নি।
আগামী ২৭ অক্টোবর প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে।