প্রায় ২২ বছর ধরে তালাবন্দি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী। ফলে বন্ধ রয়েছে শিল্পকলা ও সংস্কতিক সকল কার্যক্রম।
অযত্ন অবহেলায় আর রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে বাদ্যযন্ত্রসহ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের প্রয়জনীয় আসবাব পত্র। কারন হিসেবে দায়িত্বে থাকা সরকারি কমকর্তাদের উদাসীনতা ও স্থানীয় নেতৃত্বের আসন ভাগা ভাগি নিয়ে রশি টানা টানিকে দায়ি করছেন শিল্পী সমাজ ও শিল্পানূরাগীরা।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, ১৯৯০ সালে মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠিত হয়ওয়ার পর। নিজস্ব জায়গা ছাড়াই অস্থায়ী ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার ভবনে দু’টি কক্ষে এর কার্যক্রম শুরু হয়। পদাদিকারবলে তৎকালীন ইউ.এন.ও সভাপতি ও রুহুল আমিন ফারুকীকে সাধারন সম্পাদক করে একটি কমিটির মাধ্যমে চারজন সংগীত শিক্ষক ও শতাধীক ছাত্র/ছাত্রী নিয়ে সপ্তাহের চার দিন দুই ব্যাজে সংগীত, নৃত্যসহ অন্যান্য শাখার ক্লাস চলতে থাকে।
শিক্ষক হিসেবে বেতার শিল্পী নারায়ন চন্দ্র রায়, স্বপন কর্মকার ও নৃত্য শিল্পী সঞ্জিব চৌধুরীকে উপজেলা পরষিদ ফান্ড থেকে প্রতি মাসে সম্মানী ভাতাসহ নিয়োগ দেয়া হয়। শুরু থেকে বছর দুই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম চোখে পড়ার মত হলেও ১৯৯২ সালে কমিটি ও নির্বাহী কর্মকর্তার ভুল বোঝা-বুজিতে বন্ধ হয়ে যায় সকল কার্যক্রম। বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা।
শিল্পকলা একাডেমীর নিজস্ব সম্পদ হারমোনিয়াম, তবলা, তানপুরা, গীটার, স্পেনিয়াস, মেন্ডোলিন, জিপসী, মন্দিরা, সেতার, খোল, নাল, মাইক সেট ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সহ প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মালামাল রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
অবশিষ্ট যে টুকু আছে তাও সড়িয়ে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার কার্যালয় ভবনের পশের একটি টিন সেট ঘরে ফেলে রাখা হয়েছে।
একাডেমীর সংগীত শিক্ষক স্বপন কর্মকার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, প্রায় দু’যুগ ধরে মোরেলগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমীর সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ায় সংগীত চর্চায় কমলমতি ছাত্র/ছাত্রীদের প্রতিভা বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আব্দুল হালিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে তিনি বলেন, শিল্পকলা একাডেমীর সকল কার্যক্রম শিগ্রই চালু করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নতুন করে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে।
তবে মালামাল বা ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সম্পর্কে তার জানা মতে- কয়েক খানা ভাঙ্গা চেয়ার, বেঞ্চ, টেবিল ছাড়া অন্য কিছুই নেই বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডার মোঃ লিয়াকত আলী খান ক্ষোভের সাথে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, শিল্পকলা একাডেমী দীর্ঘ্য বছর বন্ধ থাকার বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না।
একাডেমীর কার্যক্রম পূনরায় চালুকরার জন্য সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।