অপেক্ষার পালা শেষ ! এবার সারাদেশের সাথে রেল পথে যুক্ত হচ্ছে মংলা।
শিগগির মংলা টু খুলনা রেললাইন নির্মান কাজ শুরু হচ্ছে বলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানিয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলী।
প্রাথমিকভাবে এই রেল লাইনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এজন্য নকশা তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে এবং তা খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। এখন চলছে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তুতি।
চলতি অর্থ বছরের ২০১৪-২০১৫ মধ্যেই জানুয়ারি ২০১৫ সালে লাইন নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে। ৫২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইন নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে ১ হাজার ৫২৫ একর। এর মধ্যে ভারত সরকার ১ হাজার দুইশ ৩১ কোটি টাকা ঋণ দেবে। বাকি টাকা যোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার।
মংলা-খুলনা রেললাইনের প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান নকশা অনুযায়ী মংলা থেকে খুলনার ফুলতলা পর্যন্ত নতুন এই রেল লাইনের দূরত্ব হবে ৫২ কিলোমিটার।
শুধুমাত্র রূপসা নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণ করতে হবে এই লাইনের জন্য। এ কাজে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে ১ হাজার ৫২৫ একর।
অপরদিকে, ইতোপূর্বে নেয়া নকশা অনুয়ায়ী রূপসা-দিঘলিয়া উপজেলা হয়ে খুলনা-মংলা রেল পথ নির্মাণ করতে হলে ভৈরব, আত্রাই ও আঠারোবেঁকী নদীর ওপর নির্মাণ করতে হবে তিনটি সেতু।
এক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে দুই হাজার একরেরও বেশি। এছাড়াও অনেক পাকা বাড়ি-ঘর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এ কারণে রূপসা-দিঘলিয়া উপজেলা বাদ দিয়ে রূপসা সেতুর দক্ষিণ পাশ দিয়ে রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা অনুযায়ী ৫২ কিলোমিটার রেল লাইনে ফুলতলা ও মংলা মূল স্টেশন ছাড়াও আড়ংঘাটা, মহম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাঠী, ভাগা ও ডিগরাজ এলাকায রেল স্টেশন থাকছে। রূপসা নদীর খানজাহান আলী সেতুর ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে একটি রেলসেতু নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে মংলা-খুলনা রেললাইন প্রকল্পের কনসাল্টেন্ট (পরামর্শক) শিশির কুমার শীল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, খুলনা বাইপাস সড়কের পশ্চিম হয়ে রূপসা সেতুর দক্ষিণ পাশ দিয়ে কাটাখালি এবং সেখান থেকে মংলা পর্যন্ত যাবে। এ জন্য নকশা তৈরির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে এবং তা খুলনা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে।
এখন চলছে জমি অধিগ্রহণের তোড়জোড়। এছাড়া চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই জানুয়ারি ২০১৫ সালে লাইন নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে।
২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) সভায় মংলা-খুলনা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রেলপথে সহজেই মংলা বন্দর থেকে খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পরিবহন করা যাবে।
নেপাল, ভুটান ও ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার ক্ষেত্রে রেললাইনটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। এতে মংলা বন্দর আরো গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।