বাগেরহাট শহরের ভৈরব নদী তীরে গড়ে তোলা কাঁচাবাজার, ইটেরগোলাসহ প্রায় ৭০টি অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার সকাল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট) পিযুষ চন্দ্র দে’র নের্তৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত ওই অভিযান চালায়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী হাকিম পিযুষ চন্দ্র দে ঘটনাস্থলে বসে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, শহরের ভৈরব নদী পাড়ের প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে ব্যবসায়ীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণীর লোক অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা কওে আসছে। নদীর তীর রক্ষায় গত বৃহষ্পতিবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের মাইকিং করে নদের তীরে গড়ে ওঠা সকল সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
কিন্তু এর পরও তারা অবৈধ স্থাপনা সমূহ সরিয়ে না নেওয়ায় সোমবার সকালে শহরের মুনিগঞ্জ চাঁনমারী কালভার্ট থেকে শুরু করে বাসাবাটি কেবি মাছ বাজার পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কাঁচাবাজার, ইটবালুর গোলা, চায়ের স্টলসহ প্রায় ৭০টি অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
তবে, এঘটনায় বাজারের ক্ষতিগ্রস্থ কয়েকজন ঝুড়ি ব্যবসায়ী দাবি করেছেন তারা পৌরসভাকে ঘরপ্রতি বার্ষিক ১০ হাজার টাকা দিয়ে নদীর তীরে এসব স্থাপনা গড়ে তোলেন। গত দশ বছর ধরে তারা এখানে ব্যবসা করে আসছেন।
অবৈধ ভাবে নদী তীরে স্থাপনা তৈরী করে ব্যবসা চালিয়ে আসা ঝুড়ি ব্যবসায়ী রনজিত বাইতি, বাসুদেব বাইতি, সুকুমার বাইতি এবং কালিপদ বাইতি বাগেরহাট ইনফোকে অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভাকে প্রতি বছর দশ হাজার টাকা করে দিয়ে আমরা এখানে ব্যবসা চালিয়ে আসছি। কিন্তু জেলা প্রশাসন হঠাৎ করে অভিযান চালিয়ে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে দিয়েছে। এখন আমরা কোথায় যাব তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
এদিকে ব্যবসায়ীদের করা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ম্যাজিষ্ট্রেট পিযুষ চন্দ্র দে বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, পৌরসভাকে এই ব্যবসায়ীরা কিভাবে টাকা দিয়েছে তা জেলা প্রশাসনের জানা নেই।
ক্ষুদ্র কলা ব্যবসায়ী দেলোয়ার, মকবুল, টুকু ও রুহুল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বাজার সমিতিকে খাজনা দিয়ে শহরের প্রধান বাজারের সামনে আমরা স্থাপনা গড়ে তুলে গত বারো বছর ধরে ব্যবসা চালিয়ে আসছি। প্রশাসন এটি ভেঙ্গে দেয়ায় আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।
ব্যবসা করতে বিকল্প জায়গা দিতেও প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান তারা।
এ ব্যাপার বাগেরহাট কাঁচাবাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক মোমিন মোল্লা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বাজারে জায়গা স্বল্পতার কারনে শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে স্বল্প পুঁজির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কাঁচা স্থাপনা তুলে ব্যবসা করে আসছে। প্রশাসন এসব স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
অন্যদিকে, নদী তীর রক্ষায় প্রশাসনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শহরের সাধারন মানুষ। তারা নদীকে রক্ষায় প্রশাসনকে আরো উদ্যোগী হতে এবং নদী তীর রক্ষা ও এর সৌন্দর্য বর্ধনের দাবি জানান।