আগের মত আর নেই মোরেলগঞ্জের সাংস্কৃতিক চর্চা। অবহেলা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ঝিমিয়ে পড়েছে উপজেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেই আর আগের মত সেই প্রান চাঞ্চাল্য। দিবস ভত্তিক দায়সারা গোছের সরকারি কিছু অনুষ্ঠানই যেন সাংস্কৃতিক চর্চার প্রধান ক্ষেত্র হয়ে দাড়িয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় ২২ বছর ধরে কার্যক্রম নেই মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর। অযত্ন অবহেলা আর রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এখানকার বাদ্যযন্ত্রসহ প্রায় ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের প্রয়জনীয় আসবাবপত্র।
কারন হিসেবে দায়িত্বে থাকা সরকারি কমকর্তাদের উদাসীনতা ও স্থানীয় নেতৃত্বের আসন ভাগা ভাগি নিয়ে রশি টানা টানিকে দায়ি করছেন শিল্পী সমাজ ও শিল্পানূরাগীরা।
মোরেলগঞ্জের শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্যকার ও নির্দেশকরা জানান জানায়, ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহ শিল্পীদের গৎবাঁধা এবং পুরোনো কিছু পরিবেশনা দিয়েই চলে দিবস ভিত্তিক অনুষ্ঠান। এ ছাড়া আনেক দিন ধরে উপজেলায় ব্যতিক্রম কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজন নেই।
রাজনৈতিক অস্থিরতা, পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, তরুন প্রজন্মের অনাগ্রহ, শিল্পী সমাজের কোন্দলসহ নানা কারন এর জন্য দায়ি। সাহিত্য, নাটক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রায় ২০ টির মতো সংগঠন থাকলেও হাতে গোনা দু-একটি সংগঠন ছাড়া বাকিগুলো নাম সর্বস্ব হয়ে পড়েছে। অনেক সংগঠন বিলুপ্তির পথে।
১৯ বছর আগে “অসম্ভবের পথে হেঁটেই আমাদের আনন্দ” স্লোগান নিয়ে পথচলা পানগুছি থিয়েটার সেন্টার নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হলেও পৃষ্ঠপোষকতা আর শিক্ষার্থীর অভাবে সেটিও ধুঁকছে। শুরুর দিকে থিয়েটারটি স্থানীয় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকাসহ ২০১১ সালে জাতীয় শিশু নাট্য প্রতিযোগীতায় তৃতীয় হওয়ার গৌরব অর্জন করলেও।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পানগুছি থিয়েটার সেন্টার গত কয়েক বছরে নতুন কোন প্রযোজনা মে আনতে পরেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী, নাট্যকার ও নির্দেশক জহির বাচ্চু বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, একেবারেই ঝিমিয়ে পড়েছে, এ কথা ঠিক না। মোরেলগঞ্জে অনেক সম্ভাবনাময় শিল্পী ও অভিনেতা আছেন। যারা পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে পড়ে আছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে গন মাধ্যমে অশ্লীল প্রচারনা, শিল্পীদের মাদক সেবন ও নানা অনৈতিক কাজের খবর ছড়িয়ে পরায় এর প্রভাব মোরেলগঞ্জেও পড়েছে।
সংগীত শিক্ষক, কন্ঠশিল্পী তপন কর্মকার বাগেরহাট ইনফো ডটমকে বলেন, এখানে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই। অপর দিকে তরুনেরা রাজনীতির প্রতি যতটা আগ্রহী সেই তুলনায় সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রতি তাঁদের আগ্রহ নেই বললেই চলে।
এ ক্ষেত্রে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী কিছুটা ভুমিকা রাখতে পারতো, কিন্তু সেটিও নেতৃত্ব শূন্যতায় ভূঁগছে। প্রায় ২২ বছর যাবৎ কার্যক্রম নেই প্রতিষ্ঠানটির।
এবিষয়ে সংগীত শিক্ষক ও বেতার শিল্পী স্বপন কর্মকার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, তরুনদের সামাজিক দায়বদ্ধতা কমে যাওয়া এবং টেলিভিশন ও সিনেমা নির্ভর হয়ে ওঠাও উপজেলার সাংস্কৃতিক কমকান্ড ঝিমিয়ে পড়ার অন্যত একটি কারন।
এ ক্ষেত্রে গুরুত্ব ভূমিকা রাখতে পারলে শিল্পকলা একাডেমী। তাই, প্রতিষ্ঠানটিকে পুনরায় চালু করতে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন এবং সাংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে রুপ দানের দাবি তাদের।