মামলার ফাঁদে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মংলা সমুদ্র বন্দরে হারবারিয়া এলকায় দুই বিদেশী জাহাজ আটকা পড়েছে।
মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার ওই জাহাজ দুটি আটক করা হয়। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত মামলায় এ দুই জাহাজকে আটকের আদেশ দেয় হাই কোর্ট।
জাহাজ দু’টি হল- কুক আইল্যান্ডে’র পতাকাবাহী জাহাজ “এমভি মিলিমাস” এবং লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ “এমভি এশিয়ান প্রোপারর্টি”।
এমভি মিলিমাস গত ১০ অক্টোবর এবং লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এমভি এশিয়ান প্রোপারটি ১৬ অক্টোবর সার নিয়ে মংলা বন্দরের হারবারিয়া এলাকায় নোঙর করে।
চট্টগ্রামের দুই ব্যবসায়ীর মামলার কারণে ওই জাহাজ দুটি আটকা পড়েছে বলে শুক্রবার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন মংলা বন্দর কর্তিপক্ষের হারবার মাষ্টার আক্তারুজ্জামান।
বন্দরের হারবার সূত্রে জান গেছে, জাহাজ দুটির মধ্যে এমভি মিলিমাস গত ১০ অক্টোবর এবং এমভি এশিয়ান প্রোপারটি ১৬ অক্টোবর সার নিয়ে মংলা বন্দরের হারবারিয়া এলাকায় নোঙর করে।
এমভি মিলিমাসের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বরাত দিয়ে মংলা বন্দরের হারবার বিভাগ জানায়, চট্টগ্রামের ফ্রেন্ডস্ মাল্টি ট্রেড নামে একটি শিপিং কোম্পানি ওই জাহাজের চাহিদা অনুযায়ী চলতি বছরের ২১ এপ্রিল ৪০ ড্রাম লুব অয়েল (তেল), ৮০ মেট্রিকটন ডিজেল ও দুইশ’ মেট্রিকটন ফার্নেশ অয়েল সরবরাহ করে।
পরবর্তীতে জাহাজের মালিক নানা টালবাহানায় ওই জ্বালানির মূল্য পরিশোধ করা থেকে বিরত থাকে। এতে ১৩ অক্টোবর পাওনা টাকা আদায়ের জন্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলাটি করেন। এমভি মিলিমাসের কাছে কোম্পানিটি ২ লাখ ১৪ হাজার ৫৭২ মার্কিন ডলার পাওনা রয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে, জাহাজ এমভি এশিয়ান প্রোপারর্টি বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে পারে নি মংলা বন্দরের হারবার বিভাগ।
সূত্র জানায়, এমভি এশিয়ান প্রোপারর্টির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ব্যাপারে চট্টগ্রামের হারবার থেকে মংলাকে জানান হয়েছে। তবে শুক্রবার দুপুর কোন লিখিত অফিস আদেশ পান নি মংলা বন্দ কর্তপক্ষ।
অপর আর একটি সূত্র জানায়, হারবার বিভাগে কাগজ পত্র না পৌছালেও বন্দরের অন্যান্য শাখায় এ ব্যাপারে আদেশ এসে পৌঁছেছ।
এদিকে মামলার ফাঁদে পড়ে বন্দরে পরপর দু’টি জাহাজ আটকা পড়ায় বাড়তি চাপের পাশাপাশি মংলা বন্দরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
দুটি জাহাজ আটকা পড়ায় বন্দরে বাড়তি চাপ পড়ার বিষয়টি স্বিকার করে হারবার মাষ্টার আক্তারুজ্জামান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, মংলা বন্দরের হারবারিয়া এলাকায় ৮ টি জাহাজ নোঙর করার ক্ষমতা রয়েছে। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাহাজ দুটি এখানে থাকলে তা বাড়তি চাপের।
জাহাজ দুটি আটকা পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি আদালতের বিষয়। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছুই করার নেই।
এদিকে মংলা বন্দরের ষ্টিভিডরস্ মেসার্স হাশেম এন্ড সন্সের সত্ত্বাধিকারী জুলফিকার আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বন্দরে এসে কোন জাহাজ মামলায় পড়লে বা আটক হলে ওই বন্দর সম্পর্কে নেগেটিভ ধারণা চালু হয়। যায় ফলে দেশি বিদেশি জাহাজ মালিকরা ওই বন্দরে জাহাজ প্রেরণ করতে চান না। এধরনের ঘটনা মংলা বন্দরের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে।
তবে টাকা আদায়ের জন্য এটাই একমাত্র মাধ্যম বলেও তিনি মন্তব্য করেন তিনি।
এ ব্যাপারে মংলা বন্দর কর্তপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এইচ আর ভুঁইয়া বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, এই মামলার সাথে মংলা বন্দরের কোন সম্পৃক্ততা নেই। চট্টগ্রামের দুই ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় জাহাজ দুটি আটক হয়েছে।
মংলা বন্দরের উন্নয়নে সকলকে আরো আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।