নানা আয়োজনে বাগেরহাটের মংলায় পালিত হয়েছে তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৫৮তম জন্মবার্ষিকী।
দিনটি স্মরণে বৃহস্পতিবার সকালে মংলার মিঠেখালিতে কবির সমাধীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ‘রুদ্র স্মৃতি সংসদ’।
এর আগে কবির জন্মদিন স্মরণে রুদ্র স্মৃতি সংসদ (মিঠেখালি) চত্বর থেকে একটি র্যালী বের হয়ে মিঠেখালী বাজার প্রদক্ষিণ করে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক লোকজন র্যালীতে অংশ নেয়।
পরে কবির সমাধীস্থলে অনুষ্ঠিত হয় মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার অনুষ্ঠান।
এছাড়া বিকালে কবির গ্রামের বাড়ি মিঠাখালিতে রুদ্র স্মৃতি সংসদ কার্যালয়ে কবির স্মরণে আলোচনা ও রুদ্র সংগীত অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন রুদ্রের নিজ হাতে গড়া সংগঠন ‘অন্তর বাজাও’ এর শিল্পিরা।
দ্রোহ, প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশাল জেলার আমানতগঞ্জের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহন করেন। তার শৈশবের অধিকাংশ সময় কেটেছে নানা বাড়ি মংলার মিঠেখালি গ্রামে। এখানকার পাঠশালাতেই শুরু হয় তার পড়াশুনা।
মাটি ও মানুষের প্রতি আমূল দায়বদ্ধ কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে আধুনিক বাংলার অন্যতম কবির স্বীকৃতি।
অকাল প্রয়াত এই কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রাম। নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে; হয়ে উঠেছিলেন তাদেরই কন্ঠস্বর।
‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’- এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন- ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’।
যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।
মাত্র ৩৪ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন।