দেশ বিদেশের ভক্ত-দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর বাগেরহাটের হাকিমপুর শিকদারবাড়ির ৪০১ দেবদেবীর প্রতিমা নিয়ে গড়া দেশের সর্ববৃহৎ পুজামন্ডপ।
মহা ধূমধামে এখানে চলেছে দূর্গাপুজা উৎসব। দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে ভক্ত- দর্শনাথীরা এসেছেন এখানে।
আয়োজকরা বলছেন, শুধু বাগেরহাটই না, প্রতিমার সংখ্যা ও আড়ম্বরতার দিক থেকে এবছর এটাই দেশের সব থেকে বড় পুজা মন্ডপ।
বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের শিকদারবাড়ির এ পুজা মন্ডপে সপ্তমীর দিন থেকেই উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
দূর্গা পুজার অবিচ্ছেদ্য প্রতিমাগুলোর সাথে বাড়তি প্রতিমা স্থাপন করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রামায়ণ ও মহাভারতের বিভিন্ন কাহিনী ও দেব-দেবীদের প্রতিরূপ, রয়েছে আলোকসজ্জা। আর তাই দিন-রাত সারাক্ষণ ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকছে এ মন্ডপটিতে।
২০১০ সালে ১০১টি প্রতিমা নিয়ে শিকদার বাড়ির এই মন্দিরে প্রথম দূর্গাপুজা শুরু হয়। এবছর ৪০১টি প্রতিমা নিয়ে দেশের সব থেকে বড় পুজা মন্ডপের আয়োজন করেন তারা।
চৌদ্দজন সহকারী নিয়ে পাঁচ মাস ধরে এ পুজাঁ মন্ডপে প্রতিমা তৈরী করেছেন রাজবাড়ি জেলার কারিগর কার্ত্তিক শর্মা। বিভিন্ন প্রতিমার পাশাপাশি মন্ডপের বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠছে হনুমানজীর ৩২ ফুট উঁচু প্রতিমাটি। মন্দিরের পাশের পুকুরে স্থাপন করা হয়েছে এটিকে।
জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দূর্গোৎসব উপভোগ করার জন্য আসছেন বিভিন্ন শ্রেনী পেশাজীবীসহ দর্শনার্থীরা। অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে উপভোগ করতে আসছেন এই পুজা মন্ডপে। শিকদারবাড়ির পুজা মন্ডপটির আশপাশে সাজানো হয়েছে দশনার্থীদের নজরকাড়ার মতো আধুনিক রুপে।
ঢাকা থেকে এ মন্ডপে আসা দর্শনার্থী বাসুদেব বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘এত সখ্যাক প্রতিমা কখনও দেখিনি। অনেক আনন্দ ও অনেক ভাল লেগেছে। আমার মনে হয় এই পুজ মন্ডপটি দেশের সেরা হবে।
কাকলী রানী নামে অপর এক দর্শানার্থী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘বরিশাল থেকে বেড়াতে এসে এই পুজা মন্ডপ দেখে আমি গর্বিত। যারা আয়োজন করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। অজোগাপাড়ায় এত বড় আয়োজন কখনও দেখিনী।
আয়োজক কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ডা: দুলাল কৃষ্ণ শিকদার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, দূর্গাপুজা শুরু থেকেই এলাকার মানুষের উৎসাহ এবং সহযোগিতা পেয়ে আসছি। তাই এবছর পুজামন্ডপে ৪০১ প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে।
বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আমাদের পুজা মন্ডপে আসছেন। ক্রমন্বয় দর্শনাথীর সংখ্যা বাড়ছে। দেশের জেলার বিভিন্ন স্থান, এমনকি পশ্চিম বাংলা থেকেও দর্শনার্থীরা আসছেন তাদের মন্ডপ দর্শন ও পুজা দিতে।
বাগেরহাট জেলা পুজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি অমিত রায় জানান, বাগেরহাট জেলার ৯ টি উপজেলায় ৫৭১ টি মন্দিরে এবার উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে দূর্গাৎসব।
হাকিমপুরের শিকদার বাড়ির সর্ববৃহৎ আয়োজন ছাড়াও জেলা সদরের কাড়াপাড়ার রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের সার্বজনীন পূজা মন্দিরে ২৫১টি প্রতিমা দেখতেও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছে দর্শনার্থীরা।
সবমিলে শান্তিপূর্ণ এবং সৌহার্দ্যের মধ্যে বাগেরহাটে ব্যাপক উৎহ উদ্দীপনায় শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।