প্রচ্ছদ / খবর / ২০ দেশের বাঘ বিশেষজ্ঞদের সুন্দরবন পরিদর্শন

২০ দেশের বাঘ বিশেষজ্ঞদের সুন্দরবন পরিদর্শন

SundorBon-Pic-2সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের সুন্দরবন অংশ পরিদর্শন করলেন বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশের ৫০ সদস্যের আন্তর্জাতিক বাঘ বিশেষজ্ঞরা।

‘টাইগার স্টকটেকিং সম্মেলন’ শেষে বিশ্বখ্যাত বাঘ বিশেষজ্ঞসহ ২০ টি দেশের ৪০ জন বিদেশি প্রতিনিধিসহ ৫০ সদস্যের এ প্রতিনিধি দল সুন্দবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার কথা বলেছেন।

গত ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর দুই দিন ধরে এ প্রতিনিধি দল সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের পর ‘সুন্দরবনে বাঘ রক্ষায়’ তাদের মতামত তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে সুন্দরবনে নিয়মিত বাঘ পর্যবেক্ষণ করার কথা বলেন ওই বিশেষজ্ঞদল।

বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘের একমাত্র আবাসস্থল। এজন্য বাঘ রক্ষা করতে বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সভার মাধ্যমে সমন্বয় করার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞ দলটি।

Tiger ©প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে বিদেশি ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, দুই দিন ধরে নৌযানে করে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দলটি বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার উদ্দেশে ফিরে গেছেন।

‘দ্বিতীয় গ্লোবাল টাইগার স্টকটেকিং সম্মেলন’ শেষে ৪০ সদস্যের বিদেশিসহ ৫০ সদস্যের  দলটি বাংলাদেশে বাঘের একমাত্র আবাসস্থল পরিদর্শনের জন্য বুধবার বাগেরহাটের মংলা হয়ে সুন্দরবনের পূর্ব অংশে প্রবেশ করেন।

বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ওই প্রতিনিধি দলটি সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী,করমজল, শৈলা নদী, ও জামতলার মাঠসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।

এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা লঞ্চের মধ্যেই বাঘ রক্ষায় বনসংলগ্ন গ্রামবাসীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ভিলেজ টাইগার রেসপর্ন্সটিম’ (ভিটিআরটি) ও কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্যদের সঙে মতবিনিময় সভা করেছেন বলে সূত্র জানায়।

সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি বাঘের আক্রমণ বৃদ্ধিএছাড়া বাঘ বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশে বাঘের আবাস্থল সুন্দবন নিয়ে বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলেন। ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বদেন প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী।

এ পরিদর্শন টিমে বিশ্বখ্যাত বাঘ বিশেষজ্ঞ সেইডেন স্টিকারসহ ইউকে, ইউএসএ, জার্মানি, রাশিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালোশিয়া, নেপাল, ভূটান, কাজাকিস্তান, কিরগিস্তান, লডর্স ও শ্রীলংঙ্কাসহ ২০টি দেশের  বিশ্বখ্যাত বাঘ বিশেষজ্ঞসহ প্রতিনিধিরা ছিলেন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, প্রতিনিধি দলটি ২ দিন ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বাঘের আবাসস্থল সরজমিনে দেখার পর বিশেষজ্ঞরা সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষা করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণের জন্য মতামত তুলে ধরেন।

একই সঙ্গে বাঘ রক্ষা করতে বিভিন্ন দেশের সহযোগীতা, দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সভার মাধ্যমে সমন্যয় করার কথা বলেছেন প্রতিনিধিরা।

ডিএফও মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী আরো জানান, ২০০৪ সালের সর্বশেষ বাঘ সুমারির  তথ্য মতে সুন্দর বনে ৪৪০টি বাঘ রয়েছে।

Royal-Bengal-Tigerএছাড়া ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে থেকে ৩০ সদস্যের একটি টিম বাঘ সুমারির কাজ করে যাচ্ছে। এ টিমটি অত্যাধুনিক ৮০টি অটোমেটিক ক্যামেরার সাহায্যে সুন্দরবনকে  পূর্ব, পশ্চিম ও মধ্য অংশ করে মোট তিনটি ভাগে ভাগ করে কাজ  করছে এ টিমটি। আর এটি ২০১৬ সালের শেষ দিকে সম্পন্ন  হবে বলে তিনি জানান।

আর কাজটিতে টেকনিক্যাল সার্পোট দিচ্ছে ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সিটিউট অব ইন্ডিয়া ও বন বিভাগ যৌথ ভাবে।

ডিএফও আরো জানান, যে অংশে ক্যামেরা স্থাপন করা হয় সে অংশে সর্বোচ্চ রেড এ্যালার্ট জারি করে থাকে বন বিভাগ। আর ক্যামেরা স্থাপনের নির্দিষ্ট সময় থাকে ৩০ থেকে ৪০ দিন। এই রেড এ্যালার্টের মধ্যেও  ৮০টি মূল্যবান ক্যামেরার মধ্য থেকে  প্রায় ১০ লাখ টাকা মূল্যের ৯টি ক্যামেরা জেলেরা বা বনদস্যুরা চুরি করে নিয়ে গেছে। তার কারনে এ শুমারিতে কোন প্রভাব ফেলবেনা। সুন্দরবনের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে বিদেশি ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মুগ্ধ হয়েছেন বলে তাদেরকে জানান।

‘ঢাকা ঘোষণার’ মধ্যে দিয়ে মঙ্গলবার ‘দ্বিতীয় গ্লোবাল টাইগার স্টকটেকিং সম্মেলন’ শেষ হয়েছে। রোববার সোনারগাঁও হোটেলে ৩ দিনব্যাপী ওই সম্মেলনের উদ্ধোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্মেলনে বাঘ অধ্যুষিত ১৩টি দেশসহ ২০টি দেশের ১৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। সম্মেলনে ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বে  বাঘের সংখ্যা  বর্তমানের চেয়ে বাড়িয়ে দ্বিগুন করার নানা পরিকল্পনা নয়টি ঢাকা সুপারিশ  গ্রহণ করা হয়।

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ :: ইয়ামিন আলী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এসআই হকনিউজরুম এডিটর/বিআই

About Yeamin Ali