পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন অন্ধ্র-উড়িষ্যা উপকূলে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে হঠাৎ করেই উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগ।
উপকূল জুড়ে বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। ফলে মংলাসহ দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
এদিকে হটাৎ করেই সাগর উত্তাল হয়ে ওঠায় নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে শুরু করেছে সমুদ্রে মৎস আহরণে যাওয়া জেলেরা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় শুক্রবার রাত থেকে উপকূলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া ভারি বর্ষণ আগামীকাল রোববার সকাল ৯টা পর্য্যন্ত অব্যহত থাকতে পারে।
শনিবার অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
একই সাথে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে অধিদপ্তর থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন অন্ধ্র-উড়িষ্যা উপকূলে অবস্থিত লঘুচাপটি সামান্য উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে ও ঘণীভূত হয়ে বর্তমানে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উড়িষ্যা উপকূলে অবস্থান করছে।
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করায় উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে, বাগেরহাটের শরণখোলা মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান – শনিবার ভোর থেকে হঠাৎ করেই যেন সাগর ফুঁসে উঠেছে । এরফলে সাগর বুকে অবস্থান করা শ’শ জেলেদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। যে যারমত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাচ্ছেন।
জেলেদের বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান – ইতোমধ্যে সাগর থেকে প্রায় দেড়শ জেলে লোকালয়ের ঘাটে আসার জন্য রওনা দিয়েছে। সন্ধ্যার ভিতরে তারা কিণারে পৌঁছে যাবার আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে মংলা বন্দরের হারবার মাষ্টার আক্তারুজ্জামান দুপুর ২টায় বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন- মংলা বন্দরে বর্তমানে ৬টি বিদেশী জাহাজ অবস্থান করছে। তবে এই দুর্যোগপূর্ণূ আবহাওয়ায় জাহাজের খালাস বোঝাই কাজে কোন প্রভাব পড়ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
তবে মংলা বন্দন ব্যবহারকারী আহসান হাবিব হাসান জানান- মুষলধারা বৃষ্টির কারণে মংলা বন্দরে অবস্থানরত জাহাজের মালামাল খালাস বোঝাই কাজে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে।
এছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে শনিবার সকাল থেকে মংলায় সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছে না । ভোর থেকেই এক নাগরে এখানে বৃষ্টি হচ্ছে। অতিরিক্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
মংলা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইউনুস আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, দুপুর দুইটা পর্যন্ত যে পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে তাতে পৌর সভার অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে সারাদিন চলতে থাকলে মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়বে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বৃষ্টির কারণে মংলা থেকে সড়ক পথে মালামাল পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মংলার স্ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী মো ইলিয়াচ হোসেন। বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে তিনি বলেন- বৃষ্টির কারণে পরিবহণ শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।