এক সপ্তাহের ব্যবধানে বঙ্গোপসাগরে আবারো গন-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এবার দস্যু বেলাল বাহিনী জেলেদের উপর হামলা চালিয়ে মুক্তিপনের দাবীতে ৮০ জেলেকে অপহরন করে নিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এসময় দস্যুরা নগদ টাকা, ইলিশ, চাল, ডাল, মোবাইল ফোন সেটসহ ৫০ লাখ টাকা মুল্যের মালামাল লুট করে।
এদিকে, এক সপ্তাহ পূর্বে অহৃত শতাধিক জেলে এখনো মুক্তি না পাওয়ায় তাদের স্বজনরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। এবার ইলিশ ধরা না পরায় একদিকে যেমন অব্যাহতভাবে লোকসান, অপরদিকে বারবার জলদস্যুদের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হওয়ায় জেলে ও ইলিশ ব্যবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী উপকূলের জেলেরা জলদস্যুদের কবল থেকে পরিত্রান পেতে বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে সোমবার পাথরঘাটায় মানববন্ধন করবে।
জেলের অপহরনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা জাতীয় মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, এক সপ্তাহ পূর্বে সাগরে অপহৃত শরণখোলা, পাথরঘাটা, চরদোয়ানী, চট্রগ্রাম, কক্সবাজার, ভোলা, মহিপুরসহ অন্যান্য এলাকার শতাধিক জেলে এখনো মুক্তি পায়নি।
তিনি জোনান, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অপহরনরে পর জিম্মিদের নারিকেলবাড়িয়া খালের মধ্যে গভীর বনে নিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে অভিযান চালালে অপহৃতদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য সমবায় সমতিরি সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, শুক্র ও শনিবার দু’দিনে দুর্ধর্ষ জলদস্যু বেলাল বাহিনী সাগরের নারিকেলবাড়িয়া এলাকায় জেলে বহরে হামলা চালায়। এসময় ভোলা, বরিশাল, কক্সবাজার চট্রগ্রামসহ অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ী যারা আলীপুরে মাছের ব্যবসা করেন এমন ফিশিং ট্রলার মালিকদের অন্তত্য ৫০ জেলেকে বেলাল বাহিনী মুক্তিপনের দাবীতে জিম্মি করেছে।
এর মধ্যে আলীপুরের জেলে রুহুল আমিন, ভোলার চরফ্যাশনের জেলে সাহাবুদ্দিন, কামাল হোসেন, আঃ মান্নান, আবুল ফজল, ইফসুব মাঝি, লিটন মাঝি, রুহুল আমিন, সিরাজ মাঝি, নোয়াখালীর আলাউদ্দিন, চট্রগ্রামের কালাম সারেং রয়েছে।
তিনি আরো জানান, বেলাল বাহিনী সব মিলিয়ে ৮০ জেলেকে অপহরন করেছে। গত এক সপ্তাহ পূর্বে ফরহাদ বাহিনী কর্তৃক অপহৃত আলীপুরের ইসমাইল হোসেন, রতন মাঝি, সন্দিপের শফি মাঝি, কক্সবাজারের তৈয়ব মাঝিসহ অন্যান্যরা এখনো মুক্তি পায়নি।
বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আঃ মান্নান বাগেরহাট ইনফোকে জানান, একই ঘটনায় বেলাল বাহিনী পাথরঘাটার ৭/৮ জন জেলে নিয়ে গেছে। তবে, অপহৃতদের নাম ও ঠিাকানা তিনি তাৎক্ষনিকভাবে জানাতে পারেননি।
তিনি আরো জানান, সাগর ও তার তীরবর্তী এলাকায় কোষ্টগার্ড টহলে থাকলেও তাদের দ্বারা জেলেরা কোন সুফল পাচ্ছে না। জলদস্যুদের কবল থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্টমন্ত্র্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে জেলেরা মানববন্ধন করবে। মানববন্ধন শেষে সমাবেশের মাধ্যমে পরবর্তী বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে।
এব্যাপারে কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার আলাউদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ৮০ জন জেলে অপহরনরে খবর তার জানা নেই। তবে, এক সপ্তাহ পুর্বে অপহৃত শতাধিক জেলেকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।