বনফুলের দই। তাও আবার স্পেশাল। নামের বাহারের গুনে বনফুলের মিষ্টি বা দধি খেতে পছন্দ করেনা এমন লোক পাওয়া দায়। তবে এবার সেই বনফুলের স্পেশাল দইয়ের ভিতর পাওয়া গেল মরা ‘টিকটিকি’।
কয়েক মাস আগে বেশ ঘটা করেই বাগেরহাট শহরের প্রানকেন্দ্র রেলরোডে উদ্ধোধন করা হয় বিখ্যাত এ বনফুলের শো-রুমের। শহরবাসির ধারনা ছিল প্রসিদ্ধ এ নতুন বনফুলের দোকানের কারনে অন্যান্য মিস্টির দোকানীদের গুনগত পরিবর্তন হবে।
তবে তাদের সে আশায় ছাই ঢেলে দিয়েছে বনফুল কতৃপক্ষ। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বনফুলের বাগেরহাট বিক্রয় কেন্দ্র থেকে এক কেজি স্পেশাল দই কিনে বাসায় এনে তা থেকে কয়েক চামশ খেতেই ছোখ ছানাবড়া হয়ে যায় ফারুকুজ্জামানের। বাগেরহাট কেবল ভিশনের সভাপতি ফারুকুজ্জামান বাপ্পি অনেক সখ করেই এদিন দুপুরে খাবারের সাথে বনফুলের দই কিনেই যেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বনে যান।
শনিবার এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে শহরময়। দইয়ের মধ্যে টিকটিকি পাবার খররে জনমনে তৈরী হয় আতংক।
খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে ফারুকুজ্জামান বাপ্পির বাসায় গেলে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে তিনি জানান, বনফুলের বাগেরহাট বিক্রয় কেন্দ্র থেকে অন্যান্য দিনের মত দই কিনে বাসায় এনে কিছুটা খাওয়ার পর তার ভিতর একটি আস্ত টিকটিকি দেখতে পান। এঘটনার পর থেকে তিনি শারিরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এদিকে ঘটনা জানা জানি হলে অনেক গ্রাহকই কম্পানিটির দধির পাশাপাশি এখান থেকে মিষ্টি কিনে অনেকে বিপাকে পড়ার অভিযোগ করেছেন।
সদর উপজেলার রনবিজয়পুর এলাকার ব্যবসায়ী শেয়েব আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, তিনি তার বাড়িতে অতিথি আসলে বনফুল থেকে মিষ্টি কিনে ছিলেন। বাসায় নিয়ে সে মিষ্টি খেতে পারেন নি। শহরের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বাচ্চার জন্য আইচক্রিম কিনে ছিলেন। যার ভিতর কাঠের টুকরা পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সভাপতি শাহাহান মিনা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, দইয়ের ভিতর টিকটিকি পাওয়ার ঘটনা খুবই আপত্তিকর। তাকেও বনফুলের বাগেরহাট বিক্রয় কেন্দ্র থেকে থেকে নষ্ট মিষ্টি দেয়া হয়েছিল বলে দাবী করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিষয়টি তখন জেলা প্রশাসনকেও জানানো হয়েছিলো।
এ বিষয়ে শনিবার বনফুলের বাগেরহাট বিক্রয় কেন্দ্র গেলে সেখানে ম্যানেজার দাবী করা মাহমুদ মোল্লা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, যেহেতু এই টিকটিকি টি দইয়ের ভিতরে ছিল তাই এই বিক্রয় কেন্দ্রে কোন দোষ নেই। কারখানা থেকেই এমন ভাবে তাদের সরবরাহ করা হয়েছে।
তবে এ ব্যপারে কোম্পানীর উর্ধতন কতৃপক্ষের মোবাইল নাম্বার দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন ওই ব্যক্তি।
এছাড়া, নষ্ট মিষ্টি বিক্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা কখনও মেয়াদ উত্তীর্ন মিষ্টি বিক্রয় করেন না । মিষ্টি কিনে বাসায় নিয়ে প্যাকেট থেকে খুলে না রাখলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে ইতিপূর্বে তাদের কিছু সম্যস্যা ছিল যা এখন ঠিক হয়ে গেছে বলেও তিনি দাবী করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ক্রেতা-ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান লায়ন মোঃ নুর ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, এসব নামী দামী কোম্পানী জনস্বাস্থের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামত ব্যবসা করছে। এদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলা হওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলীর দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, বনফুল এধনের কর্মকান্ড করলে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।