লাভজনক হলেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি দেশের দ্বিতীয় প্রধান সমুদ্র বন্দর ‘মংলা’ বন্দরের যন্ত্রাংশগুলোতে।
দীর্ঘদিনের পুরাতন ক্রেনগুলো দফায় দফায় মেরামত করে চালানো জেটিতে পণ্য খালাস বোঝাইয়ের কাজ।
বন্দর বিশেষজ্ঞ ও ব্যবহারকারীরা মনে করেন, বন্দরকে আরো গতিশীল ও বিশ্বমানের বন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে ক্রেনসহ জেটির জন্য আরো অন্যান্য অন্তত্য ৫ সেট আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা জরুরি।
তাদের মতে, বন্দর একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। বন্দরের কাছ থেকে ব্যবহারকারী প্রয়োজনী সেবা গ্রহন করেই বন্দরকে তারা নির্ধারিত রাজস্ব ও ডিউজ প্রদান করে থাকেন। এই রাজস্ব ও ডিউজ থেকেই বন্দর পরিচালনার ব্যয় মিটিয়ে যা’ অতিরিক্ত থাকে তাই বন্দরের আয়।
মংলা বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স মায়া এন্টার প্রাইজের সত্তাধিকারী আহসান হাবিব বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে বন্দর জেটিতে কাজের জন্য আধুনিক ইকুপমেন্টের যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে। অতি পুরাতন যন্ত্রাংশগুলোকে দফায় দফায় মেরামত করে কোন মতে কিছু নতুন যন্ত্রপাতির সাথে সমন্বয় করে বন্দরের কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
মেসার্স হাসেম এন্ড সন্স এর মালিক এবং মংলা পোর্ট পৌর সভার মেয়র মোঃ জুলফিকার আলীসহ বন্দর ব্যবহারকারী ও শিপিং এজেন্টবৃন্দ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বর্তমানে বন্দর জেটিতে কন্টেইনার ও মেশিনারিজ জাহাজ খালাস কাজের জন্য যে সকল ক্রেন বা যন্ত্রপাতি রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে বন্দর জেটিতে আগত জাহাজ খালাস ও বোঝাইতে অনেক সময় বিলম্ব হচ্ছে।
অপর একটি সূত্র জানায়, গিয়ারবিহীন (ক্রেন বা ড্রেগ ছাড়া) জাহাজ এ বন্দরে পণ্য নিয়ে আসলে ওই পণ্য খালাস করার মত হারবার ক্রেনও এ বন্দরে নেই। ফলে গিয়ারবিহীন জাহাজ মংলা বন্দরে আসছে না।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক ও তড়িৎ) লেঃ কর্নেল আবু হায়াৎ মোহাম্মদ মাসুদ বলেন -বন্দর জেটির খালাস ও বোঝাই কাজ সচল রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে অতী জরুরী কিছু আধুনিক যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে।
এব্যাপারে বন্দর চেয়ারম্যান কমডোর হাবিবুর রহমান ভূইয়া এন ডিসি পিএস সি বিএন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ভবিষ্যতে জেটিতে পণ্য খালাস ও বোঝাই করার কাজে ব্যবহারে আধুনিক কিছু জরুরী ইকুপমেন্ট ক্রয়ের জন্য কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ নামে একটি প্রকল্পে ৮৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার অনুমোদন পাওয়া গেছে। এ প্রকল্পে ছাড় করা অর্থে আগামী তিন ধাপে যন্ত্রপাতি ক্রয় করার শর্ত রয়েছে
এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। তবে একশ’ টন লিফটিং ক্যাপাসিটি ক্রেন কেনার অর্থের অনুমোদন ওই তালিকায় নেই বলে জানান বন্দর চেয়ারম্যান।
এদিকে বন্দর সংশ্লিষ্টদের দাবির সাথে একমত পোষন করেছেন বন্দর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশের আধুনিক বন্দরের সাথে পাল্লা দিয়ে এ বন্দর চালাতে হলে অত্যাধুনিক কমপক্ষে ৫ সেট ইকুপমেন্ট থাকা প্রয়োজন।