ধানের নাম ‘আলোড়ন’। এই উচ্চফলনশীল জাতের এ ধান রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায়।
চলতি আউশ মেীসুমে কচুয়া উপজেলায় যেসব জমি পতিত ছিল বা আবাদ হতো না সেসব জমিতে এবার আলোড়ন জাতের ধান বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখ হাসি ফুটিয়েছে। এবার এই আউশ মৌসুমে স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবং বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় পরীক্ষামুলক আলোড়ন চাষ করে আশাতীত ফলন পেয়েছে স্থানীয় কৃষকরা।
সরেজমিনে কচুয়া উপজেলার চরসোনাকুড় এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, মঘিয়া ইউনিয়নে ৩০০ হেক্টর জমিতে ৩১ জন মহিলা চাষীসহ মোট ১৮৫ জন কৃষক অংশগ্রহন করেন। চাষীরা আশা করছেন একর প্রতি ৮৫ থেকে ৯০মন ধান পাবেন তারা। এর পুর্বে এ জমিগুলোতে কোন চাষাবাদ করা হতো না। ধানের এ বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির দেখা গেছে। এছাড়া অন্য চাষীরাও হাইব্রিড ধান “আলোড়ন” চাষ করার চিন্তা করছে বলে স্থানীরা জানায়।
চরসোনাকুড় গ্রামের কৃষক আঃ কাদের সরদার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘এসব জমিতে আগে আমরা আউশ ধানের চাষ করতাম। কিন্তু ১২-১৫ ধান হতো। তাতে খরচের টাকা না ওঠায় চাষ বন্দ করে দিয়েছিলাম। এখন আমরা আলোড়ন ধান চাষ করে ভাল ফলন পেয়ে মন জুড়ে গেছে’।
চাষী ইনছান উদ্দিন খান জানান, এই জমি পতিত ছিল। কৃষি বিভাগ ও ব্র্যাকের সহায়তা ও পরামর্শে তিনি এ ধানের চাষ করেন। প্রথমে এ জাতের ধান চাষ করায় তার কোন আগ্রহ ছিল না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধেই তিনি এ জাতের ধানের চাষ করেন। এখন সর্বকালের সেরা এ ফলনে তিনি কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
কৃষক আঃ মালেক সরদার ও নাসিরুদ্দিন সরদার বলেন, সৃষ্টিকর্তার কৃপায় তাদের যে ধান হয়েছে তাতে তারা অনেক উপকৃত হবেন। আগামীতেও এ জমিতে একই জাতের ধান লাগাবেন তারা।
ব্র্যাকের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচীর সিনিয়র উপজেলা ম্যানেজর শেখ আঃ রশিদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জনান, এই উপজেলায় অনেক জমিতে এর পুর্বে কোন ধানের চাষ করা হতো না। এমনিতেই ফেলে রাখা হতো। তিনি তার সংস্থা ব্লকের মাধ্যমে হাইব্রিড ধান আলোড়নের চাষ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেন। এ বাম্পার ফলনে কৃষকরা আরো আগ্রহী হয়ে ধান চাষ করবে।
কচুয়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র দাস বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, তিনি কৃষদের সব রকমের প্রযুক্তিগত সহায়তা করে থাকেন। আউশ মৌসুমে আলোড়ন ধানের এমন ফলন এই এলাকায় এই প্রথম। এতে চাষীদের উৎসাহ বেড়ে যাবে। কৃষকরা আগামীতে বেশি জমিতে চাষ করবে বলে জানান তিনি।