অবিলম্বে বাগেরহাটে খানজাহান আলী (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘বাগেরহাট ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’ নামে একটি সংগঠন।
রোবাবার ঢাকায় জাতীয় প্রসে ক্লাবের সামনে ওই মানববন্ধন পালনে করে সংগঠনে নেতারা।
বাগেরহাট ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন-এর সভাপত্তিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সেভে দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডশেনর চেয়োরম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, রাজনীতিবিদ এ্যাড. খান জিয়াউর রহমান, সেন্টার ফর হিউম্যান রাইট্স মুভমেন্ট মহাসচিব এম. মোজাহেদুল ইসলাম, বাড্ডা ল কলেজের অধ্যক্ষ শেখ সিদ্দিক আহম্মেদ, অধ্যাপক ডা. গোলাম রেজা প্রমূখ।
বক্তরা বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দাবী হযরত খানজাহান আলী (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিশ্ব ঐতিহ্যর প্রতীক সুন্দরবন ও তার অপরূপ জীব-বৈচিত্র্য, ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ, হযরত খানজাহান (রহ:) মাজারসহ ৬২ পীর আউলিয়ার মাজার যাহা জাতিসংঘ কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার কমপ্লেক্স ঘিরে অপারসম্ভবনাময় পর্যটন শিল্পের বিকাশে এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমূদ্রবন্দর মোংলা বন্দরের পূর্নাঙ্গ সচল করতে, শিল্পনগরী খুলনার সার্বিক উন্নয়নে বৃহত্তর খুলনার মানুষের দীঘ অর্ধ শতাব্দীর দাবী বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করা।
যুগ যুগ ধরে এলেকার মানুষ স্বপ্নের জাল বুনছে কিন্তু বাস্তবে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। যুগের পর যুগ এ অঞ্চলের মানুষের অন্যতম দাবী অবহেলিত হয়ে আসছে।
১৯৬১ সালে সর্বপ্রথম খুলনায় বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয় খুলনা শহর থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার দূরে ফুলতলা উপজেলার মশিয়ালীতে। তবে ৭ বছরের মাথায় এ পরিকল্পনা বাতিল করে তেলিগাতিতে দ্বিতীয়বারের মতো স্থান নির্ধারণ ও জমি অধিগ্রহণ কাজ শুরু করে তৎকালীন সরকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ জায়গা বাদ দিয়ে তৃতীয় দফা স্থান নির্ধারণ করা হয় বাগেরহাট জেলার কাটাখালী নামক স্থানে। চতুর্থ দফায় কাটাখালীও বাদ পড়ে।
সর্বশেষ স্থান নির্ধারণ হয় একই জেলার রামপাল উপজেলার ফয়লারহাট সংলগ্ন ঝালবাড়িতে। ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঝারবাড়িতে খানজাহান আলী বিমানবন্দরের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে বিমানবন্দরের জন্য খুলনা-মংলা মহাসড়কের পাশে ওই এলাকার ৯৩ দশমিক ৫৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। একই বছরের জুন মাসে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন বেসরকারী বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে বিমান বন্দরের জমি হস্তান্তর করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিমান বন্দরের মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে। এতে বরাদ্ধ দেয়া হয় ৩২ কোটি টাকা।
সর্বশেষ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার নির্বাচনী অঙ্গিকারের অংশ হিসেবে পর্যটকদের সুবিধার জন্য খুলনা খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খানজাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে। দায়িত্ব পাওয়ার পরই গত বছর জানুয়ারী মাসে সমীক্ষা শেষে ফেব্রুয়ারিতে ইতিবাচক রিপোর্ট জমা দিয়েছে বিমান মন্ত্রণালয়ে। অথচ হযরত খানজাহান আলী (রহঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্ধন চালুর কোন দৃশ্যমান বা কার্যত কোন উন্নয়ন পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। কিন্তু সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিকট থেকে অধিগ্রহণকৃত ৯৩ দশমিক ৫৭ একর জমি বতমানে গোচারন ভূমি ও ক্ষমতাশীন দলের নেতাদের মৎস্য চাষের স্থান হিসেবে দীঘ দিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
এ অবস্থায় এ অঞ্চলের সার্বিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি ত্বরানিত করতে অবিলম্বে বিমান বন্দরটি চালুর দবি জানান তারা।