বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর ও ভোলা নদীতে ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে।
ভোলা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে গত ৬ দিন ধরে চলা টানা ভাঙনে প্রায় অর্ধশতাধিক বসতঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কয়েক একর জমির গাছপালা এরই মধ্যে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
এছাড়া ঝুকির মধ্যে রয়েছে নদী সংলগ্ন স্থানীয় খুৃড়িয়াখালী বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠন।
শনিবার পর্যন্ত ভাঙনের কবলে উপজেলার খুৃড়িয়াখালী বাজারের ৩২ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ১০ টি বসতবাড়ি সম্পূর্ণ নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বাগেরহাটের শরনখোলা উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের এক সমকার প্রসিদ্ধ বগী বন্দরটির ভাঙনের কবলে পড়ে এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। বিগত ১০ বছরে বগী-শরণখোলা নদীতে বিলিন হয়েছে এলাকার ৫ শতাধিক বসতবাড়ি, মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্থ জেলার সর্ব দক্ষিনের উপজেলা শরনখোলা। পর পর দুটি প্রলংনকারী ঘুনিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এ জনপদের মানুষ। এর পরও তাদের ঘুরে দাড়াবার চেষ্টায় চরম দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বলেশ্বর ও ভোলা নদীর সাম্প্রতিক তীব্র ভাঙন।
অব্যহত ভাঙনের কারণে বর্তমানে উপজেলার বগী, খুড়িয়াখালী ও তেরাবাকা এলাকার প্রায় ৭/৮ হাজার মানুষের দিন কাটছে নদী ভাঙন আতঙ্কে। যে কোনো মুহূর্তে এসব এলাকার জনপদের বড় একটি অংশ ভাঙনে বিলিন হবার সঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শরনখোলার প্রসিদ্ধ খুড়িয়াখালী বাজারের মৎস বাবসায়ী ফরিদ খান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, শুক্রবারের ভাঙনে নদীগর্ভে তার মাছের আড়ৎ চলে গেছে। তার একমাত্র আয়ের উৎস ছিল এ ব্যবসা প্রতিষ্টান। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া ও সংসার চলতো তার এ মৎস আড়ত থেকেই।
শরণখোলায় কাজ করা একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) কর্মকর্তা আইউব আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, গত সোমবার দুপুরে থেকে শুরু আকষ্মিক নদী ভাঙন শুরু হয়ে খুড়িয়াখালী বাজারসহ নদীতে তলিয়ে বসতবাড়ি, গাছপালাসহ স্থাণীয় বাজারের বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এরপর থেকে ভাঙন অব্যাহত থাকায় বসত বাড়িসহ কয়েক একর জমির গাছপালা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে।
নদী তীরবর্তী কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। ফলে এলাকার মানুষের এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। অনেকেই এখন সরিয়ে নিচ্ছেন নদী লাগোয়া দোকান ও বসত বাড়ি ।
সাউথখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, হঠাৎ করেই শরনখোলার খুড়িয়াখালী বাজার সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ভাঙনে ৩২ টি ব্যবসা প্রতিষ্টান ও ১০টি বসত বাড়ি নদীতে চলে গেছে। ফলে গৃহহীন ও একমাত্র উপার্জনের অবলম্বন হারিয়ে অনেকে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এঅবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থদের জরুরি সহযোগিতা ও পুর্ণবাসনের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয সংসদ সদস্য (বাগেরহাট-৪) ডা: মোজাম্মেল হোসেন জানান, ভাঙনে যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেসব এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউব) কর্তৃপক্ষকে এরই মধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তবে, বিষয়ে জানতে পাউব বাগেরহাট এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাইনদ্দীন ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী সাথে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা এ প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেন নি।