সুন্দরবনে পৃথক অভিযানে হরিণের চামড়া, মাংস এবং শিকারে ব্যবহৃত ফাঁদসহ ৯ হরিণ শিকারী ও কীটনাশক (বিশ) দিয়ে মাছ শিকারের অভিযোগে ৪ জন আটক কয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের ডিমেরচর, পক্ষিদিয়ার চর ও ধাবড়ীর খাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে বনবিভাগ ও কোস্টগার্ড তাদের আটক করে।
মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আটককৃতদের মধ্যে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার হরিণপাড়া গ্রামের মৃত আজিজ সিকদারের ছেলে সিকদার বাদশা মিঞা (৫২), একই গ্রামের মৃত সুলতান মাঝির ছেলে মো. শাহজাহান মিঞা (৪৫), মোসলেম হাওলাদারের ছেলে হাসান মিঞা (২৬), একই উপজেলার জুনিয়া গ্রামের আব্দুর রহমান মৃধার ছেলে মো. ফকরউদ্দিন মৃধা (২২) এবং একই গ্রামের হেমায়েত আকনের ছেলে মো. ফরিদ মিঞাকে (২৭) শরণখোলা রেঞ্জের ডিমেরচর এলাকা থেকে ১টি হরিণের চামড়া, ২ কেজি মাংস ও একটি ট্রলারসহ বনবিভাগ ও কোস্টগার্ড যৌথ অভিযানের মাধ্যমে আটক করে।
আর শরণখোলা রেঞ্জের পক্ষিদিয়ার চর এলাকা থেকে একটি ট্রলারে তল্লাশি করে ৫ কেজি হরিণের মাংসসহ বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার হারুনার রশীদেও ছেলে আবুবক্কর সিদ্দিক (২৫), লাল মিয়া ছেলে সোনা মিয়া (৩২), হানীফ মীর (৫২) তার ছেলে আব্দুল কাদেরকে (২৬) আটক করে বনবিভাগের একটি টহল দল।
এছাড়া সুন্দরবনের ভোলা নদীর ধাবড়ির খালে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকারের সময় খুলনার দাকোপ উপজেলার নুরুল হক শিকদার, মিন্টু গাজী, বাবলু গাজী ও ফারুক সরদারকে ১৬ বোতল ভারতীয় কীটনাশক কট-১০ সহ আটক করে বনবিভাগ।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কোস্টগার্ডের কচিখালী কন্টিনজেন্ট কমান্ডার এম হাবিবুর রহমান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, সুন্দরবনে নিয়মিত টহলের অংশ হিসাবে বনবিভাগকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে সুন্দরবনের ডিমেরচর এলাকা থেকে ওই পাঁচ হরিণ শিকারীকে আটক করা হয়। এই চোরা শিকারীরা অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে ফাঁদ পেতে বিরল প্রজাতির চিত্রল হরিণ শিকার করে লোকালয়ে নিয়ে যাচ্ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
সুন্দরবন পুর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, নিয়মিত টহল দেয়ার সময় বনরক্ষীরা সুন্দরবনের পক্ষিদিয়ার চর এলাকা থেকে চার হরিণ শিকারীকে এবং ধাবড়ীর খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের সময়ে চার মাছ শিকারীকে গ্রেপ্তার করে।
এসব অভিযানে তাদের কাছ থেকে একটি হরিণের চামড়া, দশ কেজি মাংস, একটি মাথা ৭৫ মিটার হরিণ শিকারের ফাঁদ এবং তিনটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার ও তিনটি ডিঙ্গি নৌকা এবং ১৬ বোতল কীটনাশক উদ্ধার করা হয়।
এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে।