বাগেরহাটেসহ দেশের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পিসি কলেজের ৯৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী শনিবার।
এ উপলক্ষে শনিবার সকাল সোয়া ৯টায় কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের কারা হয়।
র্যালিতে নেতৃত্ব দেন ঐতিহ্যবাহী সরকারি পি.সি. কলেজ, বাগেরহাটের অধ্যক্ষ ও ৯৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎযাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর সুকণ্ঠ কুমার মন্ডল।
র্যালিটি কলেজ চত্তর প্রদক্ষিন শেষে ক্যাম্পাসের আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের (পিসি) মূর্তিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করে।
কলেজের উপ-অধ্যক্ষ প্রফেসর এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, ৯৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎযাপন পরিষদের আহ্বায়ক প্রভাষক শহ্ আলম ফরাজি, কলেজের রোভার স্কাউট ইউনিট, বিএনসিসি প্রাটুনসহ বিভিন্ন বিভাগ ও শ্রেণীর প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী র্যালিতে অংশ গ্রহণ করেণ।
ঐতিহ্যবাহী সরকারি পি.সি. কলেজের ইতিহাস ও পরিচিতিঃ
বাঙালি তথা ভারতের বিজ্ঞান ভাবনার অগ্রদূত বিশিষ্ট পদার্থ বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় তৎকালীন খলিফাতাবাদ ও হাবেলী পরগনার জমিদার, সাধারণ মানুষ ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিগণদের নিয়ে ১৯১৬-১৯১৮ সাল সময় কালে “বাগেরহাট কলেজ” এর ভিত্তি রচনা করেন।
পরবর্তিতে ১৯১৮ সালের ০৯ আগস্ট বাগেরহাট শহরের পশ্চিম পাশে বর্তমান পৌর শহরের হাড়িখালি এলাকায় অবস্থিত কলেজটিকে “প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজ” নামে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃতি প্রদান করেন। সে সময় আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের অনুরোধে ঋষি কামাখ্যাচরণ নাগ এ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
তাঁর ছিল অসাধারণ পান্ডিত্য। ইংরেজী, বাংলা, সংস্কৃত, পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, অর্থনীতি, ইতিহাস, দর্শন, প্রভৃতি বিষয়ে তিনি তাৎণিকভাবে শ্রেণী পাঠদান করতে পারতেন। প্রায় ২২ বছর যাবৎ তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।
সে ময়ম কলেজটি কে চালিয়ে নিতে কলেজের গঠনকালে গভার্নিং বডির সদস্যদের সাথে নিজে দ্বারে দ্বারে ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করতেন তিনি। ১৯২৪ সাল পর্যন্ত ইংরেজী, গনিত, ইতিহাস, ও সংস্কৃত বিষয়ে অনার্স পড়ানো হতো। পরবর্তীতে বাংলা, অর্থনীতি, আরবী ইত্যাদি বিষয়ে অনার্স খোলা হয়।
১৯৪৭ সালের দিকে দশ বিভাগের পর সাময়িকভাবে এ কলেজের অগ্রগতি কিছুটা ব্যহত হয়।
১৯৬০ সালে এ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার এবং হোস্টেলে প্রায় ৫শত ছাত্রের আবাসনের ব্যবস্থা ছিল। এসময় পুনরায় বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখায় ডিগ্রী কোর্স চালু হয়।
সে সময় সাতক্ষীরা, যশোর, গোপালগঞ্জ এবং বরিশালের পশ্চিমাঞ্চলের শিার্থীরা এ কলেজে পড়াশুনা করতো।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৯ সালের ৭ মে তৎপালিন বাংলাদেশ সরকারের রাষ্টপতি কলেজটি জাতীয়করণ করেণ। ১৯৯৬ সাল হতে কলেজটিতে ১৪ টি বিষয়ে অনার্স ও ৬ টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে।
বর্তমানে প্রায় কুড়ি একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কলেজের একাদশ-দ্বাদশ, অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্স মিলিয়ে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।
বাগেরহাট সরকারি পি.সি. কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুকণ্ঠ কুমার মন্ডল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, চলতি বছর অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলার করনে বড় কোন আয়োজন ছাড়াই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করা হয়েছে।