বাগেরহাটে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় অন্যতম আসামী রাজাকার কমান্ডার সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাষ্টার ওরফে কসাই সিরাজকে (৭৪) সেফ হোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বৃহষ্পতিবার সকালে আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালত-১ এর বিচারক এম এনায়েতুর রহিম, জাহাঙ্গীর হোসেন এবং আনোয়ারুল হকের যৌথ বেঞ্চ শুনানী শেষে এই আদেশ দেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কসাই সিরাজকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে একদিনের জন্য ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সেফ হোমে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়।
এদিন প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর সাইয়েদুল হক সুমন।
তিনি জানান, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তাদের সুবিধামতো যেকোনো একদিন সিরাজ মাস্টারকে সেফ হোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে আদালত আদেশ দিয়েছে।
এছাড়া আগামী ২০ অগাস্ট এ মামলায় তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান প্রসিকিউটর সাইয়েদুল।
গত ২১ জুলাই রাতে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা গ্রামের চাচা শ্বশুরের পরিত্যক্ত খুপড়ি ঘর থেকে সিরাজ মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে বাগেরহাট মডেল থানার পুলিশ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কচুয়া উপজেলার শাঁখারীকাঠি বাজারে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ৬টি অভিযোগে মামলা হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাগেরহাট সদরের গোটাপাড়া গ্রামের মৃত হারেজ উদ্দিনের ছেলে সিরাজ মাস্টার মুক্তিযুদ্ধের পর এলাকা ছেড়ে সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে বসবাস করছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কচুয়ার শাখারীকাঠি বাজারে ৪২ জনকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় নিহত
রঘুদত্তকাঠি গ্রামের জিতেন্দ্র নাথ দাসের ছেলে নিমাই চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ২০০৯ সালে কচুয়া থানায় সিরাজ মাস্টারসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা দীর্ঘ তদন্তশেষে সিরাজ মাস্টার, আকরাম হোসেন খান ও আব্দুল লতিফ তালুকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
গত ১০ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ১১ জুন মামলার আসামি আব্দুল লতিফ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে কচুয়া থানা পুলিশ। ১১ জুন তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এরপর গত ১৯ জুন অন্য আসামি আকরাম হোসেন খানকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করে মোড়েলগঞ্জ থানা পুলিশ ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করে।