টানা তিন দিন ধরে চলা বৈরি আবহাওয়ার আর প্রতিকুল পরিবেশর কারনে মঙ্গলবারও উত্তার রয়েছে বঙ্গোপসাগর।
ফলে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া কয়েক হাজার ট্রলার সাগর ছেড়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে আশ্রয় নিয়েছ।
এদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে সাগর ছেড়ে কূলে ফেরার সময় ৩টি ফিসিং ট্রলার ডুবির খবর পাওয়া গেছে। তবে এতে কোনো প্রাণহানি বা নিখোঁজের ঘটনা ঘটেনি।
বনবিভাগ ও জেলেদের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে সাগর ছেড়ে উপকূলে ফেরার সময় প্রচন্ড ঢেউয়ের আঘাতে বাগেরহাটের ২টি এবং পাথরঘাটার ১টি ট্রলার ডুবে গেছে।
সূত্র জানায়, এসময় ডুবে যাওয়া ট্রলারের জেলেদেরকে অন্য ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে, ট্রলার ৩টির নাম ও কারা এর মালিক তা জানা যায়নি।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে আবহাওয় অধিদপ্তরের এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্মচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে বর্তমানে মধ্য প্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করায় উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এজন্য আজও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৩ নম্বর নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।একই সাথে আবহাওয়ার
সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যšত উপকূলের কাছে থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বনবিভাগ জানায়, বর্তমানে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি, কচিখালী, কটকা, দুবলা, নারকেলবাড়িয়া, শ্যালাসহ বিভিন্ন নদী ও খালে ২ থেকে ৩ হাজার ফিশিং ট্রলার সাগর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া, পাথরঘাটা, মহিপুর, চরদুয়ানীসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় আরও কয়েক হাজার ট্রলার আশ্রয়ে রয়েছে বলে ওই জেলে সূত্র গুলো দাবি করেছে।
এব্যপারে জাতীয় মৎস্য সমিতির শরণখোলা শাখার সভাপতি আবুল হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, মৌসুমের শুরতেই কয়েকদফা বৈরী আবহাওয়ার সম্মূখীন হতে হয়েছে। তাছাড়া ভরা মৌসুমেও সাগরে ইরিশের দেখা মিলছে না। তার ওপর বন ও জলদস্যুদের তান্ডব চলছে সাগরে।
এই তৃমুখী সংকটে হতাশ হয়ে পড়েছে উপকূলীয় জেলে-মহাজনরা। ৮-১০টি ছোটবড় দস্যু বাহিনী ট্রলার টার্গেট করে বসে আছে। তাদের চাঁদা না দিয়ে সাগরে জাল ফেলার কোনো উপায় নেই। একেক গোনে (ট্রিপে) দেড়-দুই লাখ টাকা খরচ করে সাগরে গিয়ে ইলিশ না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। অনেকে পুজি হারিয়ে চরম লোকসানের মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলার রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষ (এসিফ) মো. কামাল আহমেদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, সাগর থেকে ফেরার পথে ৩টি ট্রলার ডুবির কথা তিনি শুনেছেন। তবে এব্যপারে সঠিক কোন তথ্য তার জানা নেই।
তিনি জানান, সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে কয়েক হাজার ট্রলার আশ্রয় নিয়েছে। এসব ট্রলার ও জেলেদের নিরাপত্তার জন্য বনবিভাগ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন।