বাগেরহাট শহরের দশানী এলকায় অবস্থিত খুলনা বিভাগীয় নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে ৭ বছরের এক রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শিশুটির নাম শুকতারা। তার বাবা আলী আহমেদ মিয়ানমার (বার্মা) রহিঙ্গা নাগরিক।
মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে আনার পর শুকুতারার মৃত্যু হয় বলে জানান আবাসনের উপ-তত্ত্বাবধায়ক। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত উপ-তত্ত্বাবধায়ক এম রেজাউল আলম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ২০১৩ সালে মার্চ মাসে বার্মা থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে দালালের মাধ্যমে ভারতে যাওয়ার পথে সাতক্ষীরায় পুলিশের হাতে একই পরিবারের ৮ জন আটক হন। পরে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের মাধ্যমে ২৪ মার্চ শুকতারা বাবা বাদে পরিবারের বাকি ৭ জনকে খুলনা বিভাগীয় এই আবাসন কেন্দ্রে এনে রাখা হয়।
এখানে আসার পর থেকেই শিশু শুকতারা বিভিন্ন সময়ে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ত। অসুস্থ হলেই তাঁকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হত। মঙ্গলবার সকালে শুকতারার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয় বলে জানান তিনি।
নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, শুকতারারা মোট ছয় ভাইবোন। দুই ভাই, চার বোন। গত দেড় বছর ধরে শুকতারার মা দুলু বেগমসহ ওই পরিবারের মোট ৭ সদস্য এখানে আছেন।
তিনি জানান, শুকুতারার পিতা আলী আহম্মেদ গত কয়েক বছর ধরে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার চরালাথী ক্যাম্প এলাকায় আছেন। সর্বশেষ গত মাসে আলী আহম্মেদ তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিজের জিম্মায় নিতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন।
এদিকে শিশুটির বাবা আলী আহম্মদের দাবি, ‘সোমবার বিকাল থেকে শুকুতারা অসুস্থ তার চিকিৎসার জন্য বারবার ওখানকার স্যারদের বলার পরও তারা চিকিৎসা করায়নি। তিনি বলেন, তখন চিকিৎসা করা হলে আমার মেয়ে মারা যেত না।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মইন উদ্দিন মোল্লা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ‘সকাল দশটার ৪০ মিনিটের সময়ে মৃত অবস্থায় রোহিঙ্গা ওই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। কি রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়ে তা ময়না তদন্ত ছাড়া বলা অসম্ভব নয়।
এব্যাপারে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু. শুকুর আলী সংবাদিকদের জানান, রোহিঙ্গা শিশুটির লাশের ময়না তদন্ত বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হবে। শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি সাতক্ষীরার আদালতকে জানানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।