প্রচ্ছদ / খবর / ‘ওসি-ইউএনও আমাকে চেনে মংলা পোর্টের সবাই’ (অডিওসহ)

‘ওসি-ইউএনও আমাকে চেনে মংলা পোর্টের সবাই’ (অডিওসহ)

সংবাদিক পরিচয় দানকারী এক ব্যক্তি এবং বাগেরহাটের মংলার এক জেলের মধ্যকার ফোন আলাপ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

Mongla-Bagerhatবাগেরহাট ইনফো ডটকম হাতে পেয়েছে সে ফোনালাপের অডিও রেকর্ড। ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই অডিও রেকর্ডের কথা বার্তা শুনে চোখ কপালে উঠে অনেকেরই। ইতমধ্যে বিষয়টি তদন্তে নেমেছেন গোয়েন্দ সংস্থাও।

অডিওতে একজন নিজেকে একুশে টেলিভিশনের মংলা প্রতিনিধি আবুল হাসান পরিচয় দিয়েছেন আর অপরজন আওয়াল নামেন জনৈক এক জেলে।

আবুল হাসান ওই জেলেকে সুন্দরবনে অবৈধভাবে মাছের ব্যবসার প্রস্তাব দেন। এক পর্যায়ে আওয়ালকে রাজী করাতে সাংবাদিক পরিচয় দানকারী হাসান বলেন “সুন্দরবনে ডাকাত-মাকাত যেগুলো যা আছে সবতো জানি, এগুলো সব বুঝবানে (বুঝবো)”।

আর এই বাক্য বিনিময় নিয়েই সকলের যত আগ্রহ। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, অনেক আগ থেকেই সুন্দরবনের ডাকাতদের সাথে আবুল হাসানের সখ্যতার খবর চাউর ছিলো। এ অডিওতে সে পরোক্ষভাবে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

ফোন আলাপের কথোপকথনে শোনা যায়, ওই সাংবাদিক বলছেন, “ওসি-ইয়োনো (ইউএনও), আমাকে চেনে মংলা পোর্টের সবাই।” এসময় মংলার এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পরিচয় দিয়ে তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যানের কাছে জিঞ্জাসা করে দেখেন একুশে টিভির সংবাদিক আবুল হাসান কে !”

মংলা থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, অডিওটি শুনেছি। সেখানে তিনি (আবুল হাসান) সুন্দরবনের ডাকাতদের সম্পর্কে কনফেডেন্সলি কথা বলেছেন। এছাড়া কৌশলে ওই জেলের কাছে ওসি ও ইউএনও এর নামও ভাঙ্গিয়েছেন। ব্যাপারটা দুঃসাহসিক ।

অডিওর আবুল হাসানই একুশে টেলিভিশনের মংলা প্রতিনিধি নিশ্চিত করে মংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব হাসান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, অডিও শুনে যা বুঝলাম তাতে সুন্দরবনের নো ফিস ল্যান্ডে মাছ ধরার জন্য বনবিভাগের সাথে আঁতাতের মাধ্যমে জেলে আওয়ালের সাথে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন আবুল হাসান।

পাশাপাশি হাসানকে ব্যবসায় নিলে দস্যুরা কিছু বলবে না তাও বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।

এব্যাপারে মংলা প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক আমীর হোসেন আমু বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ব্যাপারটা সাংবাদিকদের জন্য দুঃখ জনক। তার এই অপকর্মের দ্বায়ভার সাংবাদিকরা নিবেন না।

তিনি আরো জানান, মংলায় কর্মরত সকল সাংবাদিক তার এই অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাবে এক সভায় নিন্দা জানিয়েছেন। এছাড়া গণ স্বাক্ষর দিয়ে প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন তারা।

অন্যদিকে একটি গোয়েন্দা সূত্র জানান- ধারাবাহিক ভাবে আবুল হাসানের বিরুদ্ধে পত্রিকায় ও অনলাইনে নিউজ হচ্ছে। এতে তার দুর্নীতির খতিয়ান বেরিয়ে আসছে। এছাড়া এক নারী সাংবাদিক তার বিরুদ্ধে ব্লাক মেইল করার আশংকায় থানায় জিডি করেছেন।

সবশেষ ফাঁস হওয়ার অডিওসহ আবুল হাসানের বিরুদ্ধে সবগুলি বিষয়ই গুরুত্বে সাথে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান সূত্রটি ।

তবে এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত আবুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে পুরো ব্যাপারটি ষড়যন্ত্রমূলক দাবী করে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে তিনি বলেন, অতীতেও আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে এখনো হচ্ছে।

এর আগে দেশ বরেণ্য বিদেশী মুক্তিযোদ্ধা ফাদার মারিনো রিগনের টাকা চুরির ঘটনায় একবার টেলিভিশন থেকে তিনি (আবুল হাসান) চাকরি চ্যুত হন বলেও জানা গেছে।


ওই সাংবাদিক কে নিয়ে আরো কিছু নিউজ-

স্বাক্ষর জালিয়াতি: ভিজিএফের চাল আত্মসাতের চেষ্টা
জুয়া ঘরের নাম মংলা রিপোটার্স ক্লাব !
নিভে গেলো জুয়া ঘরের বাতি !

০১ আগস্ট ২০১৪ :: এমএম ফিরোজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এসআই হকনিউজরুম এডিটর/বিআই

About ইনফো ডেস্ক