বাগেরহাটের মংলায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ এস এম সোলায়মান এই রায় দেন।
আদালত রায়ে আমামি জাহিদুল ইসলাম ফরাজিকে (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদন্ড ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন।
দন্ডাদেশপ্রাপ্ত জাহিদুল ইসলাম ফরাজি বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার উত্তর বাধাল এলাকার আফজাল ফরাজির ছেলে। পেশায় দিনমজুর জাহিদুল বিয়ের পর থেকে বাগেরহাটের মংলা উপজেলার সিগনাল টাওয়ার এলাকায় বসবাস করছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মংলা পৌরসভার সিগনাল টাওয়ার এলাকার নজির আহমেদের মেয়ে আছিয়া বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সংসারের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। এই নিয়ে প্রায় আছিয়ার স্বামী জাহিদুল তাঁকে মারধর করত।
এর জের ধরে ২০০৫ সালের ১৩ মার্চ রাতে দু’জনের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে জাহিদুল তাঁর স্ত্রীকে বেদম মারপিট করলে সে মারা যায়। পরে এটিকে আত্মহত্যা বলে চালানর জন্য জাহিদুল তার স্ত্রীর গলায় রশি পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে এবং স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে প্রচার করে।
পরদিন পুলিশ আছিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এঘটনায় ওই দিন মংলা থানার তৎকালীন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ওবাইদুল হক বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দয়ের করেন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন আছিয়াকে শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমান পেলে ওই বছরের ১১ মে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলাটিকে হত্যা মামলায় রুপান্তরিত করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মংলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল হোসেন তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ৬ মার্চ আছিয়ার স্বামী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই রায় দেন।
রায় ঘোষনার সময় মামলার একমাত্র আসামী জাহিদুল ইসলাম আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।