বাগেরহাটের চিতলমারীতে স্কুল ছাত্রীর সম্ভ্রমহানীর ঘটনায় লম্পট শিক্ষক তাপস রানা এখন শ্রীঘরে।
চিতলমারীর ডুমুরিয়া হাই স্কুলের চাকুরিচ্যুত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়ের কারা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালত লম্পট শিক্ষক তাপস রানাসহ ৪ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর নির্দেশ দেন। এর পর গত বুধবার অভিযুক্তরা আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন জানায়।
আদালত শুনানী শেষে সহযোগী ৩ আসামীকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করলেও প্রধান আসামী তাপস রানা’র জামিনের আবেদন নাকোচ করে তাকে জেল হাজতে পাঠাবার নির্দেশ দেন।
এদিকে, একটি বিশেষ মহল লম্পট তাপস রানা’র পক্ষ নিয়ে, মামলার বাদি পক্ষকে নানা ভয়-ভীতিসহ প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, ঘটনর পর বিদ্যালয় কর্ত্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস রানার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করলেও, তার বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা নেয়নি আজও। ঐতিহ্যবাহি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্নকর কার্যকলাপের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা না নেয়ায়, উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল ও ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্র নাথ অভিযুক্ত শিক্ষর রানার ভাতিজা হবার সুবাদে এ ঘৃণ্য অপরাধের বিষয়টি ধামা-চাপা দিতে সক্রিয় রয়েছে একটি মহল। ছাত্রীর সম্ভ্রমহানীর এ ঘটনা প্রকাশ পাবার পার থেকে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে দ্বিধা-সংশয়ে ভুগছেন।
অপরদিকে, একজন ছাত্রীকে যৌণ হয়রাণি ও নিবন্ধিত বিয়ে অস্বীকার করে বাড়ী থেকে বের করে রাস্তায় তুলে দেবার ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।
সূত্র মতে, ঘৃন্য ও ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার বিস্তারিত জেনে, সহপাঠী ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা স্কুলের সব কক্ষে তালা ঝুলিয়ে, অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস রানার অপসরণ ও বিচারের দাবীতে ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। অবস্থার প্রেক্ষিতে শিক্ষক তাপস রানা ঐ ছাত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন ও ভ্রুণ হত্যার দায় স্বীকার করতে বাধ্য হন।
এ সময় স্কুল কর্ত্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। ঘটনার এক পর্যায়ে ৪ জুন অভিভাবক মহল, গণমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও ছাত্র-ছাত্রীদের জোরালো দাবীর ভিত্তিতে ঐ ছাত্রীর সকল দায়-দায়িত্ব অর্পণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সাথে অভিভাবক মহলের সম্মতিতে হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রার আইন ২০১২ অনুযায়ী বিয়ে রেজিষ্ট্রি করা হয়।
প্রাইভেট পড়াবার সুযোগে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীর সাথে অনৈতিক ও দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তাপস রানা নামের স্কুলের অবিবাহিত বিএসসি শিক্ষক। এক পর্যায় অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়ে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া সরল প্রাণ ঐ ছাত্রী। অন্ত:সত্ত্বার ৩ মাস পর চিকিৎসার কথা বলে ভূল বুঝিয়ে একজন ডাক্তারকে দিয়ে ভ্রণ হত্যা করে দায় মুক্ত হবার অপচেষ্টা চালায় ধূরন্ধর ঐ শিক্ষক। এ পর্যায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে অস্বীকার করে লম্পট তাপস রানা। পরে আদালতে গড়ায় বিষয়টি।