প্রচ্ছদ / খবর / বাগেরহাটে ‘কসাই সিরাজ’ গ্রেপ্তার

বাগেরহাটে ‘কসাই সিরাজ’ গ্রেপ্তার

Bagerhat-Pic-(22-07-14)Shairajএকাত্তরের কসাইখ্যাত বাগেরহাটের কুখ্যাত রাজাকার সিরাজ মাস্টার ওরফে শেখ সিরাজুল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার রাত ১১ টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ভূক্ত এই আসামীকে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আজম খাঁন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, “২০০৯ সালের পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন সিরাজ। সম্প্রতি তিনি গ্রামে ফিরেছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল রাতে ডেমা গ্রামে অভিযান চালিয়ে মৃত মোসলেম পাইকের (তার চাচা শ্বশুর) পরিত্যক্ত খুপড়ি ঘর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।”

মঙ্গলবার সকালে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার এই আসামিকে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

সিরাজুল হক বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোটাপাড়া গ্রামের মৃত হারেজ উদ্দিনের ছেলে। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে বসবাস করে আসছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের তদন্ত কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, এলাকায় ‘কসাই সিরাজ’ নামে পরিচিত সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে একাত্তরে বাগেরহাটে কচুয়ায় শাখারীকাঠি বাজারে গনহত্যা, ধর্ষন ও বাড়ীতে অগ্নিসংযোসহ ৬ টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে তিনি বলেন, “শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার ওরফে কসাই সিরাজসহ অজ্ঞাত ২০-৩০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি ১৯৭১ সালের ৫ মে কচুয়া উপজেলার শাঁখারীকাঠি বাজারে গিয়ে নিরীহ লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং ৪২ জনকে হত্যা করেন।”

সিরাজের বিরুদ্ধে শাঁখারীকাঠি গণহত্যা ছাড়াও বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাঠি গ্রামে ৭জনকে, একই উপজেলার রণজিতপুর গ্রামে ৪২ জনকে, কান্দাপাড়া গ্রামে ১৮ জনকে, কচুয়া উপজেলা সদরে ৫ জনকে এবং রামপাল উপজেলার ডাকরা গ্রামে ছয় থেকে সাতশ নারী-পুরুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

“মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাগেরহাটের লোমহর্ষক গণহত্যাগুলোর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সিরাজের বিরুদ্ধে সব গণহত্যায় নের্তৃত্ব দেয়ার প্রমাণ মিলেছে,” বলেন জানান তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন।

গত ১০ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সিরাজুল হককে গ্রেপ্তারের আবেদন জানালে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

এ নিয়ে ‘শাঁখারীকাঠি গণহত্যা’ মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক তিন আসামির সবাইকে কচুয়া, রাজশাহী ও বাগেরহাট সদর থেকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।

এর আগে গত ১১ জুন এ মামলার অপর আসামি আ. লতিফ তালুকদারকে কচুয়া থানা পুলিশ এবং ১৯ জুন অপর পলাতক আসামি আকরাম হোসেন খাঁনকে রাজশাহী থেকে বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ ও রাজশাহী থানা পুলিশ গ্রেফতার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করে।

২২ জুলাই ২০১৪ :: স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এসআই হকনিউজরুম এডিটর/বিআই

About ইনফো ডেস্ক