বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে স্থানীয় এক শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে পিটিয়ে ও মুখে বিষ দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার বিকেলের এক সন্তানের জননী সুমি বেগমকে (২৫) পাশ্ববর্র্তি পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে স্ট্রোকের রোগী বলে ভর্তি করা হয়। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্তায় সেখানে মৃত্যু হয় তার।
বুধবার বিকালে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিহতের ময়না তদন্ত সম্পান্ন হয়েছে।
এঘটনায় নিহতের মা জিকি বেগম পিরোজপুর পুলিশের কাছে স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় অকালে সুমি বেগমকে প্রান হারাতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন । তবে উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি রিয়াজ শিকদার এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এলাকাবাসী জানায়, মোরেলগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বর্শিবাওয়া গ্রামের মৃত মজিদ শিকদারের ছেলে রিয়াজ শিকদারের সাথে ৫ বছর আগে বিয়ে হয় বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার মসনি গ্রামের সুমি বেগমের। তাদের সংসারে সিয়াম শিকদার নামের তিন বছর বয়সী একটি পুত্র রয়েছে।
নিহতের মা জিকি বেগম ও স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সুমির স্বামী এই শ্রমিক লীগ নেতা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ নিযে স্ত্রী সুমি বেগম প্রতিবাদ করেলে প্রায়শই রিয়াজ তাকে মারপিট করত। এঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার বিকেলে রিয়াজ তার স্ত্রীকে বেদম মারপিট করে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে রিয়াজ তার স্ত্রীকে পাশবর্তী পিরোজপুর সদর হাসপাতালে স্ট্রোকের রোগী বলে ভর্তি করে।
হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ডাক্তাররা প্রাথমিক ভাবে সুমিকে স্ট্রোটের প্রতিশেধক দেয় । খানিকবাদে ডাক্তাররা রোগীর মুখ থেকে বিষের গন্ধপেয়েও শত চেস্টা করে তাকে বাচাতে পারেনি। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টায় মারা যায় সুমি বেগম।
এ বিষয়ে জানতে নিহতের স্বামী রিয়াজ শিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেলে তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে দোকানে ছিলেন । এমন সময় তার মা দোকানে খবর পাঠায় তার স্ত্রী সুমি স্টোক করেছে। সে তখন বাড়িতে ছুটে গিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে নৌকা যোগে পিরোজপুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাসপাতালে ভর্তির পর প্রথমে তাকে স্টোকের প্রতিশেধক দেয়া হয়। জ্ঞান ফিরলে সুমি বিষ খাওয়ার বিষয়টি জানালেও শত চেষ্টা করে তাকে বাঁচানো যায়নি।
আর তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে, তিনি তার স্ত্রীর সাথে বাগবিতন্ডার কথা স্বীকার করলেও পরকীয়া – মারপিটে এবং মুখে বিষ দিয়ে হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এব্যাপারে পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, নিহতের স্বামীসহ বাগেরহাটের এক এমপি ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ নিতে তদবির চালায়। তদবিরের কারনে বিষয়টি পুলিশের কাছে সন্দেহজনক হওয়ায় লাশ উদ্ধার করে বুধবার দুপুরে ময়না তদন্তের জন্য পিরোজপুর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, এঘটনায় পিরোজপুর থানায় একটি ইউডি মামলা রের্কড হয়েছে। নিহত সুমি বেগমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে না বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাবার পর সে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে।