পূর্ণিমার জোয়ারে উপকূলীয় নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে দিনে দু’বার প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাটের অন্তত্য ৩৫ গ্রাম ।
রোববার জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও মংলা পৌরসভার নিম্নাঞ্চলসহ কমপক্ষে ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এছাড়া জেলা সদর, শরণখোলা ও রামপালের কিছু নিচু এলাকাও প্লাবিত হয়েছে জোয়ারের পানিতে।
দুপুরের পর থেকে ভৈরব নদীর পানির চাপে বাগেরহাট পৌর শহরের হাড়িখালি, ডাকবাংলো, নাগেরবাজার, বাসাবাটি এলকায় ঢুকে পড়ে পানি। তবে, সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে বেড়িবাঁধ না থাকা মোরেলগঞ্জ ও মংলা উপজেলার কয়েক লক্ষ মানুষ।
জোয়ারের কারনে রোববার মোড়েলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অধিকাংশ অফিসের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া গ্রামের পানি বন্দি পরিবারের সদস্যদের পড়তে হচ্ছে নানান বিড়ম্বনায়। অনেকের কাঁচা ঘর-বাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পানি দেড়ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধ ও বেড়িবাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চল এলাকার পরিবারগুলোর বাসস্থান দিনে দুই বার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। প্রতিবার জোয়ারের পানি প্রায় ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা স্থায়ী হচ্ছে।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলা অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, জোয়ারের পানিতে উপজেলা পরিষদ চত্বর তলিয়ে যায়। ফলে অফিসের কাজ-কর্মে বিড়ম্বনা পড়তে হচ্ছে। উপজেলা সদরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শামীম আহম্মেদ বাগেরহাট ইনফোকে জানান, পানগুছি নদীর তীরে পৌর এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় পৌর এলাকায় হুহু করে পানি ঢুকে পড়েছে।
এ দিকে মংলা পোর্ট পৌরসভা এলাকার নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় নানান সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
এই দুটি পৌরসভার বাসিন্দাদের রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে শহর রক্ষা বাঁধের দাবি বাস্তবায়িত না হওয়ায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলেই তাদের পড়তে হয় নানান বিড়ম্বনায়। এসব এলাকার সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ও গৃহপালিত পশু, প্রাণী ৫/৬ ঘণ্টার জন্য পানিবন্দি অবস্থায় থাকতে হয়।
অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি পানিবন্দি গ্রামগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মোড়েলগঞ্জের কুমারখালী, সন্ন্যাসী, খাউলিয়া, গাবতলা, কাঠালতলা, পাঠামারা, বদনীভাঙ্গা, সানকিভাঙ্গা, বড়বাদুরা, বারইখালী, শ্রেণীখালী, শোনাখালী, পঞ্চকরণ, ঘসিয়াখালী, বহরবুনিয়া, ফুলহাতা।
মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ এলাকার ফেরদৌস হোসেন মুন্সী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, নদীর দু’পাড়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার ধরে বেড়িবাঁধ না থাকায় এসব এলাকার গ্রামগুলোর মধ্যে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় সবচেয়ে নিম্ম আয়ের মানুষের নানান ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তিনি দ্রুত এসব এলাকার বেড়িবাঁধের দাবি জানান।