ডাকাইতের তো কোনো অভাব নাই। যে যেহাইনদে পারতেছে নেতে আছে। আর জেলেদের তো কোন মা-বাপ নাই, ওগুলো হলো বেওয়ারিশ।
ডাকাইতরা যেহাইনদে যে পারে মুক্তিপণের লাইগা ধইরা নিয়া যাইতাছে। আর জেলেরা বাড়িঘর বেইচা হউক আর যেমনে পারুক মুক্তিপণ দেতেয়াছে। ইলিশ মাছ তো নাই-ই। এই পরশু দিনও নেছে বড় পার্টিতে। খোঁজ খবর রাইখা আর কি করমু।
বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনে ঘন ঘন দস্যুদের হাতে জেলে অপরহণের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এভাবেই ক্ষোভের সাথে নিজেদের দুঃখ দূরশার কথা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানালেন জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবুল হোসেন।
তার এ ক্ষোভ যেন উপকেলের লাক্ষো জেলে আর জেলে পরিবারের কান্নারই নামান্তর।
বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে তিনি জানান, ইলিশ আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে এক মাসের বেশি হতে চলেছে। কিন্তু পশ্চিম পাশে (সাগরে বাংলাদেশের পশ্চিম অংশে) কোন ট্রলার এখনো ভিড়তেই পারেনা। দু’ একটি ট্রলার যদি ঝড়ের কবলে পড়ে বা এদিকে ওদিকে যায় তবে জেলেদের মারধর করে জাল ও মাছসহ ধরে নিয়ে যায় দস্যুরা। ট্রলার ভাংচুর করে আর ইঞ্জিন খুলে রাখে তারা।
আফসোস করে এসময় তিনি বলেন, কত আর খোঁজ রাখবো। প্রতিদিনই জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কাকে যানাবো (!) কোন লাভ তো আর হয়না।
বঙ্গোপসাগরের ট্যাকদিয়া ও লালদিয়া এলাকা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জেলে বহরে হামলা চালিয়ে ৪০ জেলে অপহরণের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বাগেরহাট ইনফোকে এসব কথা বলেন ওই মৎসজীবী নেতা।
বাগেরহাট, সুন্দরবন আর উপকুলের জেলা হওয়াতে জেলে অপহরণ এর ঘটনা মাঝে মাঝেই শোনা যায়। বিশেষ করে এখান কার সংবাদ কর্মীদের কাছে এমন খবর আসে প্রাইসই। কিন্তু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে গিয়ে পড়তে হয় বিপাকে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জেলেরা সংগঠিত নয়। আর সংগঠিত হলেও সবসময় তারা দিতে পারেন না এসবের তথ্য। কারণ বিশাল সাগর আর সুন্দরবনে মাছ ধরে উপকুলের কয়েক লক্ষ জেলে। তাই অনেক অপহরণের ঘটনাই থেকে যায় অপ্রকাশিত।
কিন্তু সংবাদ প্রকাশ বা অপ্রকাশ নয়। সাধারণ জেলেরা চান এমন দু-সংবাদ থেকে মুক্তি। চান বেয়রিস নয়, মৎস আহরণকারী জেলে হিসাবে বাঁচতে।