বাগেরহাটের শরণখোলায় একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার দায়ে ৫ জনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে বাগেরহাটের একটি আদালত।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এস সোলায়মান এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন বরগুনার বামনা উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের মো. জয়নাল আবেদিনের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস, একই উপজেলার জোয়ারতলা গ্রামের মতিয়ার সরদারের ছেলে শহীদ সরদার ওরফে শহীদুল হক সরদার, তার স্ত্রী মফিলা বেগম, পিরোজপুরের বড়মাছুয়া গ্রামের মোতাহার আলী ফকিরের ছেলে শাহ আলীম ওরফে আলীম ফকির এবং ঢাকা মহানগরীর খিলগাঁও থানার রামপুরা বাইদ্যাপট্টি এলাকার কদম আলী ওরফে হাইলা ওরফে হালিম কসাইয়ের ছেলে ওহিদুল ওরফে শহীদুল।
আসামীদের অনুপস্থিতিতে আদালতের বিচারক ওই রায় ঘোষণা করেন।
মামলার প্রাথমিক বিরবণী থেকে জানা যায়, ২০০০ সালের ৯ মার্চ রাতে পুর্ব পরিচিতি আসামীরা বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার লাকুড়তলা গ্রামের গাজী শাহবুদ্দিনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওইদিন রাতে আসামীরা খাওয়া দাওয়া শেষে তাদের সঙ্গে আনা মিষ্টিতে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে বাড়ির মালিক শাহবুদ্দিনসহ পরিবারের সদস্যদের অচেতন করে ফেলে।
পরে ওই আসামীরা শাহবুদ্দিনের বাড়িতে রাখা নগদ আশি হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ও মালামাল লুট করে। পরে তারা চলে যাওয়ার সময় বাড়ির মালিক শাহবুদ্দিন, তার স্ত্রী তাহমিনা খাতুুন দুই মেয়ে শিউলী খাতুন ও লিলি আক্তারকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকাটে এবং ছেলে মনির হোসেনকে গলায় রশি পেচিয়ে হত্যা করে।
পরদিন সকালে প্রতিবেশিরা শাহবুদ্দিনের বাড়ি এসে ডাকাডাকি করে কারও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বসত ঘরে গিয়ে শাহবুদ্দিনের মেয়ে শিউলী আক্তারকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করে। পরে ওই তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ওই চারজনের লাশ উদ্ধার করে।
১০ মার্চ নিহত শাহবুদ্দিনের ভগ্নিপতি মো. ইলিয়াস হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শরণখোলা থানার তৎকালীন ওসি নিমাই চন্দ্র মন্ডল ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর মৃত্যদন্ড প্রাপ্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আব্দুল কুদ্দুস ও মফিলা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দেয়।
আদালত বেঁচে যাওয়া কন্যা শিউলি খাতুন ও অনান্য স্বাক্ষীর স্বাক্ষ শেষে বৃহস্পতিবার এ রায় প্রদান করেন।