বাগেরহাটে এক চিংড়ি ঘের মালিককে হত্যার দায়ে দুই সহোদরসহ ৬ জনের মৃত্যুদন্ড এবং দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম সোলায়মান এই দন্ডাদেশ প্রদান করেন।
রায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত দুই আসামির প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের জেল এবং নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় পাঁচ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন- বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ফলহাতা গ্রামের মৃত আসমত আলী হাওলাদারের ছেলে হাবিব হাওলাদার ও মোস্তফা হাওলাদার, একই উপজেলার বরহরুনিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ ফরাজির ছেলে বেল্লাল ফরাজি, ছাপড়াখালি গ্রামের হোসেন মল্লিকের ছেলে শহিদ মল্লিাক, রুস্তম ফরাজির ছেলে আলী আজিম ফরাজি এবং মৃত আবদের খাঁ এর ছেলে লাবলু খাঁ।
যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ প্রাপ্ত দুই আসামি হলেন- মোরেলগঞ্জ উপজেলার বেতবুনিয়া গ্রামের করিম খাঁ এর ছেলে আফজার খাঁ এবং মাহামুদ আকনের ছেলে আনসার আকন।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার ৫ আসামি আবুল হাওলাদার, আলম ফরাজি, লোকমান ফরাজি, জয়নাল ফরাজি ও আলী ফরাজিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। তাদের সবার বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায়।
রায় ঘোষনার সময় মামলার ১৩ আসমির মধ্যে যাবজ্জীবন দন্ড প্রাপ্ত আফজার খাঁ এবং খালাস প্রাপ্ত আলম ফরাজি ও জয়নাল ফরাজি ছাড়া বাকিরা পলাতক ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ১৫ জুলাই জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বহরবুনিয়া গ্রামের চিংড়ি ঘের মালিক জয়নার জোমাদ্দরের ছেলে জাফর জোমাদ্দারকে হত্যা করেন আসামিরা।
মামলার রাষ্ট পক্ষের কৌশলী (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাড. মোহম্মদ আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকামকে বলেন, ঘটনার দিন দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ ভাবে জাফর জোমাদ্দারের চিংড়ি ঘেরে ঢুকে তাকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। পরে ঘেরে তার লাশ পাওয়া যায়।
এঘটনার নিহতের স্ত্রী হালিমা বেগম বাদি হয়ে ঘটনার পর দিন ১৬ জুলাই মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা ১৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যামামলা দায়ের কারেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাগেরহাট গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ওসি আব্দুল মতিন দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ২৭ মে ওই ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিয়োগ পত্র (চার্জশীট) দাখিল করে।
আদালত মামলার দীর্ঘ কার্যক্রম এবং স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য ও প্রমানের উপর ভিত্তি করে বৃহষ্পতিবার এই রায় প্রদান করেন।