বাগেরহাটের মংলা সমুদ্র বন্দরে জাহাজ থেকে মাল খালাসের সময় ক্রেনের তার ছিড়ে দুই বন্দর শ্রমিক নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মংলা থানায় মামলা করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে মংলা থানা পুলিশেল উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. তাজউদ্দিন বাদী হয়ে ওই জাহাজে পণ্য খালাসে আমদানীকারকের নিয়োগকৃত স্টিভেডরস নূরু এন্ড সন্সের স্বত্ত্বাধিকারী ও স্থানীয় সাংবাদিক এইচ এম দুলালের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এইচ এম দুলাল দৈনিক ইত্তেফাক প্রত্রিকার মংলা প্রতিনিধির এবং মংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি।
এদিকে, শ্রমিক নিহতের এ ঘটনা তদন্তে মংলা বন্দর গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি। তবে তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কাজ শেষ করে আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন জমা দিবে বলে আশা করছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। কমিটিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
মংলা বন্দরের প্রধান নিরীক্ষা কর্মকর্তা ( উপ-সচিব) শরীফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ৪ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়।
মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বেলায়েত হোসেন শুক্রবার বিকেলে বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, “গত ১১ জুন সকালে পশুর নদীতে অবস্থানরত এম. ভি. হ্যান জিং জাহাজ থেকে পণ্য খালাস কাজে আমদানীকারক স্টিভেডরস নূরু এন্ড সন্সের স্বত্ত্বাধিকারী ও স্থানীয় সাংবাদিক এইচ এম দুলালের নিয়োগকৃত দু’জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে ওই মামলাটি করা হয়।”
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, “ঘটনা তদন্তে গঠিত ৪ সদস্যের কমিটি তাদের তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। দু’জন শ্রমিকের মৃত্যুতে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস কাজে আমদানীকারকের নিয়োগকৃত স্টিভেডরস নূরু এন্ড সন্সের স্বত্ত্বাধিকারী ও স্থানীয় সাংবাদিক এইচ এম দুলালের গাফিলতি রয়েছে কিনা তা তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করছে।
তদন্তে তার বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কাজ শেষ করে আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদন জমা দিতে পারে বলে আশাবাদ জানান তিনি।
মি. ভূঁইয়া আরো বলেন, “নিহত ওই দুই শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। এ ধরনের ঘটনা যাতে বন্দরে আর না ঘটতে পারে সেজন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১১ জুন) সকালে বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়া বেজ ক্রিক-৩ এলাকায় অবস্থানরত এমভি হ্যান জিং (HANGIN) নামে হংকং এর পতাকাবাহী জাহাজ থেকে মাল খালাস করার সময় ক্রেনের তার ছিড়ে চাপা পড়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- মংলা উপজেলার কানাইনগর গুচ্ছগ্রামের প্রয়াত আব্দুস সাত্তার তালুকদারের ছেলে ফোরম্যান মো. আব্দুল মতিন তালুকদার (৫২) এবং একই উপজেলার কুমারখালী মিঞাপাড়া গ্রামের আকরাম সরদারের ছেলে টালি ক্লার্ক জাকির হোসেন (৩৬)।