মৌসুমের শুরুতে আবারো পূর্ব সুন্দরবনের সুপতি মৎস্য অভয়াশ্রম ও প্রজনন ক্ষেত্রে অবৈধভাবে দখলে নিতে যাচ্ছে একটি শক্তিশালী মহল। আর এদের সহযোগিতা করছেন বনবিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী এমন অভিযোগ জেলেদের।
এর ফলে একদিকে যেমন মারা পড়াবে ডিমওয়ালা মা ইলিশ, অন্যদিকে ইলিশ শূন্য হয়ে পড়ছে উপকূলীয় নদ-নদী।
সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি, কটকা ও কচিখালীর পাঁচ কিলোমিটার নদী এলাকা ‘মৎস্য অভয়াশ্রম’। বছরের ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মাছের নিরাপদ আশ্রয়, বিচরণ ও প্রজননের জন্য সংরক্ষিত এ এলাকায় সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ। এ সময় এ অঞ্চলে কোনো প্রকার জাল ফেলা এমনকি জেলেদের অবস্থান করাও নিষিদ্ধ।
তাছাড়া নিয়ম অনুসারে ওই নির্দিষ্ট সময়ে বন বিভাগকে এ অভয়াশ্রম রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার নির্দেশ রয়েছে।
কিন্তু বন বিভাগের কতিপয় কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিবছর মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ওই অভয়াশ্রমে মাছ ধরার সুযোগ দিয়ে থাকে। এর ফলে একদিকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ মারা পড়ায় উপকূলীয় নদ-নদী যেমন ইলিশ শূন্য হয়ে পড়ছে, অপরদিকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
এছাড়া ডিম ছাড়তে আসা অন্যান্য মা মাছ গুলি জেলেদের জালে ধরা পড়ায় ব্যাহত হচ্ছে মৎস্য প্রজনন।
প্রতিবছর মৌসুমে নিষিদ্ধ ওই প্রজনন ক্ষেত্র থেকে চক্রটি অবৈধ ভাবে প্রায় দেড় কোটি টাকার ইলিশ আহরণ করে থাকে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সুন্দরবনের জেলেরা জানিয়েছেন, এবারো মৌসুমের শুরুতে ওই এলাকায় মংলা, শরণখোলা ও পাথরঘাটার একটি প্রভাবশালী চক্র মাছ ধারর জন্য ইতিমধ্যে বনভিাগের সাথে তাদের গোপন চুক্তি সম্পন্ন করে ফেলেছে।
বনবিভাগের সাথে চুক্তির কথা জানাতে গিয়ে তারা আরো বলেন, এই নির্দিষ্ট সময়ে প্রভাবশালী চক্রের ২৫-৩০টি নৌকা ওই এলাকায় অবস্থান করার অনুমতি পায়। আর এর জন্য নৌকাপ্রতি ১৫ হাজার টাকা এবং ৩০ পিস করে বড় সাইজের ইলিশ দিতে হয় বন বিভাগের ওইসব অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
তবে সুন্দরবনের সুপতি স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান অভয়ারণ্যে মাছ ধরার চুক্তি বা মাছ শিকারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
এব্যাপারে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ কামাল হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বিষয়টি তিনি তদন্ত করে দেখবেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।