হত্যা মামলায় বাগেরহাটের একটি আদালত চার বনদস্যুর ফাঁসি এবং অপর ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেছেন।
রোববার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বিজ্ঞ বিচারক এস এম সোলায়মান এই রায় ঘোষণা করেন।
সুন্দরবনে ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস হাওলাদারকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় প্রদান করেণ। রায় ঘোষনা করার সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন দন্ডাদেশ প্রাপ্ত দস্যুদের ৫ জন ।
রায়ে আদালত যাবজ্জীবন দন্ড প্রাপ্ত প্রত্যেক আসামীকে ৩০২ ধারায় যাবাজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ এর সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই বছরের জেল এবং ২০১ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড, ২ হাজার টাকা জরিমান এবং অনাদায়ে আরো ৬মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেণ।
মৃত্য দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ডেমা গ্রামের ইসুফ তরফদারের ছেলে আতাহার আলী তরফদার ওরফে পরান বাবু, একই উপজেলার কাটাখালি গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে বাবুল গাজী, কালিয়া গ্রামের হাজি নোয়াব আলী শেখের ছেলে কালাম ওরফে কামাল শেখ ও রনজয়পুর গ্রামের কদম আলীর ছেলে বাচ্চু। এদের মধ্যে আতাহার আলী তরফদার বাদে বাকীরা পলাত রয়েছেন।
আর যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার কালিয়া গ্রামের কাসেম শেখের ছেলে শহিদুল শেখ, কাসেমপুর গ্রামের আলী শেখের ছেলে ইশারাত ওরফে ইশা, কালিয়া গ্রামের মাজেদ মোল্লার ছেলে ফরহাদ মোল্লা, একলাস শেখের ছেলে ফারুক, ইসরাফিল ডাকুয়ার ছেলে শানু ডাকুয়া এবং তেলিখালি গ্রামের রাহেল উদ্দিন শেখের ছেলে আব্দুল হকিম শেখ। এদের মধ্যে শানু ডাকুয়া এবং আব্দুল হাকিম শেখ পলাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিরবণি থেকে জানান যায়, ১৯৯৮ সালের ২৫ নভেম্বর সুন্দবনের জেলেদের দাদন প্রদানকারী ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস হাওলাদার, রফিকুল ইসলাম, শুকুর আলীসহ কয়েক জন জেলেদের সাথে জিউধারা ফরেস্ট স্টেশন থেকে পাস নিয়ে সুন্দরবনে মাছের পোনা সংগ্রহে যায়। বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে আসামিরা দলবল নিয়ে তাদের উপর আক্রমন করলে মো. ইলিয়াস হাওলাদার আসমি বাবুলসহ কয়েক জনকে চিনে ফেলে।
তখন তারা (দস্যুরা) ক্ষুব্ধ হয়ে কাছে থাকা একনলা বন্দুক দিয়ে ইলিয়াসকে গুলি করে হত্যা করে। পরে তার লাশ টুকর টুকর করে কেটে নৌকা সহ সুন্দরবনের খালে ডুবিয়ে দেয়। সে সময় প্রতক্ষদর্শী ইলিয়াসের ওই দুই সহযোগী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়।
পরদিন ২০ নভেম্বর নিহতের সঙ্গীরা এলাকায় ফিরে পরিবারকে জানালে ইলিয়াস হাওলাদার এর ছেলে মো. সাইফুর জামান প্রিন্স ২৫ নভেম্বর বাদি হতে দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের নামে বাগেরহাটের মংলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম ২০০২ সালে ৫ মে ১১ জনকে আদালতে অভিযোগ পত্র (চার্জশীট) দাখিল করেন।
আদালত মামলার ১০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই রায় প্রদান করেণ। আসামীদের মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা গ্রামের খালেক হাওলাদারের ছেলে রফিক ওরয়ে দুলু মামলা চলাকালে মারা যাওয়ায় আদালত তাকে এই মামলা থেকে অব্যহতি প্রদান করেণ।