মুক্তিপণের দাবিতে বাগেরহাটে অপহৃত এক এনজিও কর্মীসহ দু’জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার গভীর রাতে চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনের ফাঁকা মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।
এসময় অপহরণর সাথে জড়িত এক ব্যক্তি এবং অপহরণকারীদের ব্যহহৃত দুটি সাইকেলও উদ্ধার করে চিতলমারী থান পুলিশ। এঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে চিতলমারী থানায় একটি মামলার দায়ের করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিদর্শক মো. সেলিম মোল্লা ও জামাল হায়দার।
অপহৃতের পরিবার বাগেরহাট ইনফোকে জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলার চিতলমারীর উপজেলা বাজার মোড় থেকে ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিদর্শক মো. সেলিম মোল্লা ও জামাল হায়দার নামে এক ব্যক্তিকে দাড়িয়ে কথা বলছিলেন। এসময় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তুলে নিয়ে যায় এক দল দুর্বৃত্তরা। এর পর তাদের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
এসময় তারা হত্যার হুমকি দেখিয়ে পরিবারের কাছে মোবাইলের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এছাড়া এ সময় ওই দু’ব্যক্তির সাথে জোর পূর্বক এ বাহিনীর লোকজন তাদের এক নারীকে দিয়ে বিবস্ত্র অবস্থায় ছবি তুলে রাখে। মুক্তি পনের টাকা না দিলে ওই ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয় বলে জানায় অপহৃতদের স্বজনরা।
এরপর দীর্ঘ সময় ধরে অপহৃতদের পরিবারের সাথে মোবাইল ফোনের মধ্যমে চলে দর কষাকঘি।ওই মুহূর্তে এত টাকা দিতে পরিবারের পক্ষ থেকে সময় চাওয়া হলে তাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
এসময় অপহৃতরা মোবাইলে বাঁচার আকুতি জানালে পরিবারের লোকজন মুক্তিপনের টাকা নিয়ে বিকাশ করতে গিয়ে তারা ব্যর্থ হয়।
এক পর্যায়ে বিষয়টি পুলিশে জানায় অপহৃতদের স্বজনরা। পরে এ বাহিনী টাকা নিয়ে তাদের একটি স্থানে যেতে বলে।
এ সময় অপহৃতদের পরিবার পুলিশের সহায়তায় ঘটনাস্থলে যায়। আর পুলিশের অপর একটি দলা সেখানে অভিযান চলিয়ে ঘটনা স্থল থেকে অপহৃত ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিদর্শক মো. সেলিম মোল্লা ও জামাল হায়দারকে উদ্ধার করে।
চিতলমারী থানা সূত্রে জানা যায়, সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যাবার সময় স্বাধীন মোল্লা (৩০) নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া ঘটনা স্থল থেকে এসময় দু’টি মটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত স্বাধীন মোল্লা উপজেলাপর বারাশিয়া গ্রামের কামরুল মোল্লার ছেলে। আটক পর তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আসে।
এদিকে ঘটনার সাথে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনার পর চিতলমারী উপজেলা ব্র্যাকের ম্যানেজার শামিমা নাসরিন বিষয়টি সঠিক তদন্তসহ দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ঘটনার পর থেকে তাদের কর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার সরকার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বিষয়টি জানার পর থেকে পুলিশ অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে রাতে আড়াইটার দিকে উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের সম্মিলনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনের একটি স্থান থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
এব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুরে চিতলমারী থানায় একটি মামলার দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের আটকের জোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ওসি জানান।