বাগেরহাট জেলা কারাগারে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পরিবেশনকরা উন্নত মানের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কারা বন্দী হাজতিরা।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টার মধ্যে কারা কর্তৃপক্ষ ১৪ হাজতি ও ৬ কয়েদিকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, খাবারে বিষক্রিয়ায় তারা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কারা কর্তৃপক্ষের দাবি- খাবার খেয়ে নয়, কারাগারের পানির কারণে এ অবস্থা হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হাজতী শাহ জালাল (৩৫), হেদায়েত (৪০), গোপাল চন্দ্র পাইক (২৮), আবু বক্কর সিদ্দিক (২৮), মো. এমাদুল (৩৫), মুজিবর ফরাজী (৩০), হেমায়েত (৩৫), মিজান (৪৫), মিন্টু শেখ (৪৭), জাহিদুল ইসলাম (২৪), লিটন (২০), রাসেল (২৪), কালাম (৪০), আব্বাস (৩০) এবং কয়েদী মনির হাওলাদার (৩০), মাহাতাব খান (৪৫), নজরুল ইসলাম (৪২), বাচ্চু (৪১), হীরামনি (৪২) ও মুক্ত মীর (৩০)।
এ ছাড়া কারাগারের অভ্যন্তরে আরো পনেরো জন বন্দিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে বাগেরহাট ইনফোকে নিশ্চিত করেছে বাগেরহাট জেলা কারাগারের জেল সুপার আমানুল্লাহ।
অসুস্থ কয়েকজন বন্দী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ‘রাতে গরুর গোস ও পোলাও ভাত খেয়ে এশার নামাজের পর পেটের ব্যাথা শুরু হয়। এরপর থেকে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এতে প্রায় অধিকাংশ বন্দী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় কর্তব্যরত কারারক্ষীদের জানানো হলেও রাতে জেলার বা সুপার কেউ তাদের দেখতে আসেননি’। বরং অসুস্থ বন্দীদের সাথে কারারক্ষীদের অনেকে র্দূব্যবহার করার অভিযোগ করেন হাসপাতালে ভর্তি বন্দীদের অনেকে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কুহেলী বেগম দুপুরে বলেন, “কয়েক দফায় হাসপাতালে আনা ২০ বন্দিকে ভর্তি করা হয়েছে। খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তারা অসুস্থ হয়েছে বলে প্রাথমিভাবে ধারণা করছি। এখন তারা সবাই সুস্থ রয়েছেন।”
এ ব্যাপারে বাগেরহাট জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. আমানুল্লাহ বলেন, “কারাগারে সুপেয় পানির সংকটের কারণে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, সোমবার সকাল থেকেই কারাগারে উন্নত খাদ্য পরিবেশন করা হয়। খাদ্যের মান ভালো ছিল। কিন্তু কারাগারে খাবার পানির ভালো কোনো উৎস নেই।
বন্দিদের ব্যবহৃত টিউবওয়েলের পানিতে লবণ ও লৌহের মারাত্মক উপস্থিতি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক ও জেলা বেসরকারি কারা পরিদর্শন কমিটির সভাপতি মো. শুকুর আলী বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে আছে এবং বন্দিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
“কারা কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খবর পেয়ে কারাগার পরিদর্শন করেছেন। প্রয়োজন হলে আমরা তদন্ত কমিটি করে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান করব।”