সুন্দরবনে অপহরণের পর দুই সহোদর জেলেকে হত্যার দায়ে দুই বনদস্যুকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বাগেরহাটের একটি আদালত।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এস এম সোলায়মান এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনি গ্রামের হাবিব মাতুব্বরের ছেলে বনদস্যু মো. জুলফিকার আলী ওরফে জুলফু এবং একই উপজেলার আমড়াতলা গ্রামের জালাল মোল্লার ছেলে বনদস্যু অলী ওরফে রাজু ওরফে রতন। এদের দুই জনকে দুট হত্যা কান্ডের জন্য দু’বার পৃথক ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
আসামীদের অনুউপস্থিতিতে বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন।
তবে সম্প্রতি সুন্দরবনের গহীনে র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে জুলফিকার আলী জুলফু মারা যায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের মোকলেছ হাওলাদারের দুই ছেলে আনোয়ার হাওলাদার ও হারুন হাওলাদার নামে দুই জেলেকে হত্যার দায়ে আদালত মামলায় ৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য ও ১৬৪ ধারা জবানবন্দীসহ বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্নের পর ওই ফাঁসির আদেশ দেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিরবণি থেকে জানান যায়, ২০০৪ সালের ১১ অক্টোবর বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের মোকলেছ হাওলাদারের দুই ছেলে আনোয়ার হাওলাদার ও হারুন হাওলাদারসহ দশ বারো জন জেলে মহাজনের কাছ থেকে নয়টি নৌকা নিয়ে সুন্দরবনের শেলা নদীতে মাছ ধরতে যায়। নৌকার মালিকরা প্রতিদিন ওই এলাকায় গিয়ে জেলেদের শিকার করা মাছ নিয়ে আসতে থাকে।
ওই বছরের ১৭ অক্টোবর নৌকা মালিক আব্দুল মালেক আকন শেলা নদীতে গিয়ে নয়টি নৌকার মধ্যে দুটি নৌকা দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ওই নিখোঁজ দুটি নৌকায় আনোয়ার হাওলাদার ও হারুন হাওলাদার দুই ভাই ছিলেন। নিখোঁজের ছয়দিন পর ২২ অক্টোবর নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ারের মরদেহ শেলা নদীর বেড়ির খালের চরে পাওয়া যায়।
নিখোঁজ আনোয়ারের ভাই বাদশা হাওলাদার আনোয়ারের মরদেহ সনাক্ত করেন। তবে হারুনের লাশের সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদশা হাওলাদার ওই দিন মংলা থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মংলা থানার উপপরিদর্শক মো. আবুল হোসেন তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১২ ডিসেম্বর বনদস্যু বাগেরহাটের মংলা উপজেলার জয়মনি গ্রামের হাবিব মাতুব্বরের ছেলে মো. জুলফিকার আলী ওরফে জুলফু এবং একই উপজেলার আমড়াতলা গ্রামের জালাল মোল্লার ছেলে অলি ওরফে রাজু ওরফে রতন ওই দুই জেলেকে মাছ ধরা অবস্থায় গুলি করে হত্যা করে বলে আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।
এরমধ্যে আনোয়ারের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার হয়েছে। আদালতের বিচারক আটজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ওই দুই বনদস্যুকে পৃথকভাবে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে।
১০ এপ্রিল ২০১৪ :: নিউজ করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এসআই হক-নিউজরুম এডিটর/বিআই