বাগেরহাটে একটি হত্যা মামলায় তিন চরমপন্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
দন্ডপ্রাপ্তরা সাবাই চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল জনযুদ্ধ) সদস্য। যে মিজান সরদার হত্যার দায়ে আদালত এই আদেশ প্রদান করেণ তিনিও এই চরমপন্থি দলের সদস্য ছিলেন।
বুধবার দুপুরে বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম সোলায়মান এই আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বাগেরহাটের মংলা উপজেলার কুমারখালী গ্রামের মান্নান সেখের ছেলে শহীদ শেখ (৩৭) ও একই গ্রামের জামাল সুপারভাইজারের ছেলে ইয়াছিন আলী (৩১) এবং রামপাল উপজেলার কুমলাই গ্রামের ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে ইয়াছিন হাওলাদার। তবে রায় ঘোষণাকালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা পলাতক ছিলেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ পাপ্ত আসামি হলেন মংলা উপজেলার কুমারখালী গ্রামের সোবাহান গাজীর ছেলে মাসুম গাজী ওরফে মাকসু। আদালত তাকে একই সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে। আর এই অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে আরো দুই বছর কারাভোগ করতে হবে তাকে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহম্মদ আলী বলেন, জনযুদ্ধের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২০০৫ সালের ৭ জুন মিজান সরদার খুন হন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালে চরমপন্থি সদস্য শহীদ ভিকটিম মিজানকে একটি অগ্নেয়াস্ত্র দেয়। পরে এই আগ্নেয়াস্ত্র ও চরমপেন্থিদের নামে আদায়কৃত চাঁদার টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। একপর্যায়ে ২০০৫ সালের ৭ জুন আসামিরা মিজানকে বিবাহ দেওয়ার কথা বলে রামপাল উপজেলার মিরাখালী বেড়ি বাঁধের ওপর নিয়ে ভোরে গলা কেটে হত্যা করে।
পরদিন বেড়িবাঁধের ওপর থেকে মিজানের জবাই করা লাশ পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় নিহত মিজানের বড় ভাই সাইদ সরদার ৮ জুন রামপাল থানায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ সদস্যসহ আরো কয়েকজনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মো. আফসার উদ্দিন গাজী ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০০৬ সালের ২৯ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত বুধবার এই রায় প্রদান করেন। একইসঙ্গে অপর আসামি বাগেরহাট সদর উপজেলার গোবরদিয়া সরদার মাসুদুর রহমানকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
রায় ঘোষনার সময় সরদার মাসুদুর রহমান ও মাসুম গাজি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।