বাগেরহাটে পৃথক দু’টি হত্যা মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস.এম সোলায়মান জেলার মোরেলগঞ্জ ও ফকিরহাট উপজেলার পৃথকা দুটি মামলায় এই রায় প্রদান করেন।
মোরেলগঞ্জের মৎস্যঘের ব্যবসায়ী শাহাজামাল খান হত্যা মামলায় ৩ আসামিকে ও ফকিরহাটে আব্দুল মালেক হত্যা মামলায় ১ আসামিকে আদালত এ দণ্ডাদেশ দেন।
এর মধ্যে আদালত মোরেলগঞ্জের শাহাজামাল হত্যা মামলায় তিন আসামিকে ৩০২ ধারায় জাবজ্জীবন ও ১ আসামিকে ২০১ ধারায় তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বহরবুনিয়া গ্রামের রহমান কাজীর ছেলে সহিদুর রহমান কাজী (সহিদুল ইসলাম), সোবাহান কাজীর ছেলে মঞ্জু কাজী, কুদ্দুস খানের ছেলে মিলন খান ও ফকিরহাট উপজেলার পিলজঙ্গ বড়বাড়ি গ্রামের নাসির উদ্দিন মোল্লার ছেলে আছমত আলী মোল্লা।
মামলার শুরু থেকেই দু’টি মামলার চার আসামির সবাই পালাতক রয়েছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, মোরেলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বহরবুনিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হোসেন খানের ছেলে মো. শাজাহান খান একই এলাকার অ্যাডভোকেট হারুনের মাছের ঘেরের পাহারাদার ছিলেন। আসামিরা জমি বিক্রির কথা বলে শাজাহানের কাছ থেকে টাকা নেয়। পরে জমি না দিয়ে টালবাহানা শুরু করে।
একপর্যায়ে ২০০১ সালের ২৬ মে রাতে আসামিরা শাজাহান খানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে পাশের একটি ঘেরে তার লাশ ফেলে রাখে।
পরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা মোজাম্মেল হোসেন মোরেলগঞ্জ থানায় সহিদুল ইসলামসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ২০০২ সালের ১ অগাস্ট পুলিশ সহিদুল ইসলাম, মঞ্জু কাজী এবং মিলন খানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এ মামলায় আটজন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার আদালত সহিদুর রহমান কাজী (সহিদুল ইসলাম), মঞ্জু কাজী ও মিলন খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
অপর দিকে, ২০০৭ সালের ২ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ফকিরহাট উপজেলার পিলজঙ্গ গ্রামের খালেক লস্করের ছেলে আ. মালেক লস্করকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ আসমত আলী মোল্লা ছুরিকাঘাত করেন।
এতে গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ফকিরহাট থানায় আসমত আলী মোল্লার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৬ মে পুলিশ আসমতের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এ মামলায় ১২ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার আদালত আছমত আলী মোলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।